ঝগড়া লেগেছিল বাপ–ব্যাটার। তাঁদের চিৎকারে পাড়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। ছেলে মুখে মুখে তর্ক করে, তার এই স্বভাব মেনে নিতে পারছিলেন না বাবা। তাই ঘরে ঢুকে তাক থেকে নিয়ে আসেন বন্দুক। তাতে গুলি ভরা। বাবা ভেবেছিলেন, বন্দুক দেখে হয়তো ছেলে চুপ করে যাবে। কিন্তু তাতে কী! অকুতোভয় যুবক তখনও চেঁচিয়ে পাড়া মাত করছে। ছেলের তর্জন গর্জন থামাতে শেষ পর্যন্ত মাথা গরম অবস্থায় আচমকা বন্দুকের ট্রিগার টিপে দেন তিনি। গুলিও বেরল। কিন্তু কারও গায়ে লাগল না। তাহলে সেই গুলি গেল কোথায়?
সেই গুলি পেলেন এক চা–ওয়ালা।
খরিদ্দারদের গরম চা পরিবেশন করবেন বলে টগবগিয়ে ফোটাচ্ছিলেন কেটলিতে। তাতেই টপ করে কী যেন এসে পড়ল। চামচ দিয়ে তুলে যা দেখা গেল তাতে চক্ষু চড়কগাছ। চায়ের কেটলিতে বন্দুকের গুলি এল কোথা থেকে? খবর গেল পুলিশে। দলবল নিয়ে এল পুলিশ। দু’দিন পর পুলিশ জানতে পারে বাপ–ব্যাটার ঝগড়ার কথা। গুলির উৎস যে সেই ঝগড়া, তাও জানতে পারে পুলিশ। এরপর বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে ২১ জুন। বাসন্তী থানার পানিখালি বাজারে এক চা দোকানি তাঁর ফুটন্ত কেটলি থেকে উদ্ধার করেন গুলি। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে ওঠেন চা খেতে আসা লোকজন। কোথাও সেভাবে গোলমালের পরিস্থিতি ছিল না। তাই বর্ষার শান্ত সন্ধ্যায় গুলি চলবে, এমন কথা স্বপ্নেও ভাবেননি কেউ। প্রথমদিকে গুলির কথা জানার পর ভয় পেয়ে যান এলাকার লোকজন। প্রাথমিকভাবে আতঙ্ক কাটলেও, গুলির রহস্য উন্মোচনে আগ্রহী ছিলেন সবাই।
পুলিশ বিভিন্ন সূত্র থেকে খোঁজ পায় দক্ষিণ পানিখালির বাসিন্দা সদানন্দ দাসের। সেখানকার বাসিন্দারাই জানান, ছেলের উপর ক্ষেপে গিয়ে গুলি চালিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনায় ও গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরাও। পুলিশ ৫২ বছরের ওই ব্যক্তিকে বুধবার গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। ধৃতের কাছে ওই বন্দুক ও গুলি কী করে এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। আজ বৃহস্পতিবার সদানন্দ দাসকে কোর্টে তোলা হবে।