আন্তর্জাতিক

শ্বাসরোধ করে খুন করা হল কৃষ্ণাঙ্গকে

আমেরিকায় কিছুতেই থামছে না কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা। বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই এই খুনের প্রবণতা বাড়ছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ব্যক্তি হুমকি দিয়েছিলেন, চিন আর ভারতের নাগরিকরা আমেরিকা থেকে না গেলে গুলি করে মারা হবে। কিন্তু তাঁকে এইসব করতে হচ্ছে না। কারণ এই কাজের দায়িত্ব নিয়েছে মার্কিন পুলিশ। তাই এক কৃষ্ণাঙ্গকে মুখে ঢাকা পরিয়ে, ফুটপাথে মুখ ঠুসে, শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করা হয়েছে।
গোটা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বলছে দু’‌মিনিট মুখ রাস্তায় ঠেসে ধরেছিল বর্বর মার্কিন পুলিশ। যার জেরে শ্বাসরুদ্ধে হয়ে মারা গিয়েছেন ওই কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটি। তাঁর অপরাধ রাস্তায় উলঙ্গ হয়ে ছুটছিলেন। তাই এই অসভ্যতার উচিত শিক্ষা দিতে ওই কৃষ্ণাঙ্গকে পুলিশ প্রাণেই মেরে ফেলে। এই অভিযোগ পুলিশের অস্বীকারের উপায় নেই। কারণ কৃষ্ণাঙ্গ খুনের গোটা ঘটনা ক্যামেরাবন্দি হয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, কেনোশা শহরে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জ্যাকব ব্ল্যাককে পুলিশের গুলি করার ঘটনায় যখন উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে আমেরিকায় তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুলিশের আরও এক বর্বরতার ছবি সামনে এল। ঘটনার পাঁচ মাস পর পুলিশের এই নির্মম অত্যাচারের ভিডিওটি জনসমক্ষে এনেছে ড্যানিয়েল প্রুডের পরিবার।
জানা গিয়েছে, ৩০ মার্চ লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার পর মারা যান ড্যানিয়েল প্রুড। ঘটনাটি ঘটেছিল তারও একসপ্তাহ আগে, নিউ ইয়র্কের রচেস্টারে। ঘটনাস্থলেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। তারপর যন্ত্রই তাঁকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রেখেছিল। নিউ ইয়র্কে এমন একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে, কেউ এতদিন তা জানতেও পারেননি। বুধবার ড্যানিয়েলের পরিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ভিডিওটি রিলিজ করার পর সকলের নজরে আসে। নগ্ন হয়ে রাস্তায় ছোটার অপরাধে ড্যানিয়েলের হাতে আগেই হাতকড়া পরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। সেই অবস্থায় পুলিশ তাঁকে কেন নির্মমভাবে শ্বাসরোধ করে মারল?‌ প্রশ্ন তোলেন ড্যানিয়েলের ভাই।
ভিডিও–তে দেখা গিয়েছে, ড্যানিয়েলের হাত পেছনে করে হাতকড়া পরিয়ে দীর্ঘ সময় ফুটপাথে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ড্যানিয়েল তার প্রতিবাদ করতেই এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সাদা ঢাকা পরিয়ে দেয়। এরপর সেটি পরা অবস্থায় মুখে দু’‌মিনিট ফুটপাথে চেপে ধরায় শ্বাস আটকে জ্ঞান হারান ড্যানিয়েল।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হেপাজতে থাকা আর এক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকেও গলায় হাঁটুর চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করেই মেরেছিল পুলিশ। যার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
অত্যাচারের শেষ এখানেই নয়। দু’‌দিন আগে লস অ্যাঞ্জেলসে মার্কিন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও একজন কৃষ্ণাঙ্গ। ডিজন কিজ্জি। বয়স ২৯। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুলিশের কোনও দোষ দেখতে পান না। তাহলে এই ঘটনাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।