জেলা

বিজেপির বৈঠকে বেধড়ক মার কর্মীদের

নির্বাচনে ভরাডুবির জের। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিচ্ছে বিজেপিতে। নেতৃত্বের সমালোচনায় মুখর হচ্ছে কর্মীরা। এই প্রেক্ষাপটে বিরোধীস্বর দমন করতে রীতিমতো মারধরের রাস্তায় হাঁটছে নেতারা। এমনই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ায়। সাংগঠনিক ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে উত্তর হাওড়ায় সাংগঠনিক বৈঠক আয়োজন করেছিল বিজেপি শিবির। সেখানেই দলীয় নেতৃত্বের খামতি তুলে ধরার ‘অপরাধে’ নিচুতলার কর্মীদের বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল নেতাদের বিরুদ্ধে।

এমনকী খোদ রাজ্য নেতৃত্বের সামনে। ঘটনায় জখম হন চারজন বিজেপি কর্মী। তার মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে গোলাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আহত কর্মীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। গোটা ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের অন্তর্কলহকে কটাক্ষ করেছেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী।

বুধবার উত্তর হাওড়ার সালকিয়া নন্দীবাগানের একটি প্রেক্ষাগৃহে আয়োজন করা হয়েছিল ওই সাংগঠনিক বৈঠক। বৈঠক চলাকালীন রাজ্য ও জেলা নেতাদের দিকে সরাসরি কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন উত্তর হাওড়ার যুব মোর্চা সভাপতি রাজু দাস–সহ চারজন কর্মী। তুলে ধরেন দলের খামতিও। অভিযোগ, এই ‘অপরাধে’ই উত্তর হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী উমেশ রাই–সহ বেশ কয়েকজন দলীয় নেতা ওই চারজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। চলে কিল, চড় এবং ঘুষি।

উমেশবাবু লোহার চেয়ার নিয়েও তেড়ে যান তাঁদের দিকে। বুকে আঘাত পান বিশ্বনাথ মোদক নামে এক প্রতিবাদী কর্মী। তাঁর বুকে পেসমেকার রয়েছে। তাতেই আঘাত করা হয়েছে বলে দাবি অভিযোগকারীদের। মঞ্চে তখন উপস্থিত ছিলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা, রাজ্য নেতা দেবাঞ্জন গুহ, জেলার নেতা, বিনয় আগরওয়াল, বিমল প্রসাদ ও আদেশ সাউ। আহত ওই চারজনকে চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

আক্রান্ত রাজু দাস জানিয়েছেন, ‘আমন্ত্রণ পেয়েই আমরা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের উপর হওয়া অত্যাচার এবং সেব্যাপারে সুবিচার না মেলার কথা বলি। এই কথা তুলে ধরা কি অন্যায়? এর জন্য দরজা বন্ধ করে আমাদের মারধর করা হয়েছে। আমাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

মারধরের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের হাওড়া সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহার পাল্টা দাবি, রাজু দাস গণ্ডগোল পাকিয়ে বিজেপির সভা বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। ওঁর সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাত রয়েছে। তাই আগেই যুব মোর্চার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওঁকে। রাজুর বিরুদ্ধেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।