বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে সরগরম রাজ্য। নিয়োগ দুর্নীতি, গরু পাচার মামলা, কয়লা পাচার মামলা সহ বিভিন্ন ইস্যুতে আজ শাসকদলের বিরুদ্ধে কর্মসূচি গ্রহণ করে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় বিজেপি।
আজ সকাল থেকেই সাঁতরাগাছি থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে নবান্ন অভিযানের মিছিলকে ঘিরে উত্তেজনা ছিল চরমে। ওই মিছিলকে আটকাতে আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছিল রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি নিজে উপস্থিত ছিলেন হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে।
মিছিল করে আজ নবান্ন ঘেরাওয়ের ডাক দেন দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীরা। সেই অভিযানকে সফল করতে আগের দিন থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি কর্মীরা কলকাতায় আসতে শুরু করেন। অভিযোগ ওঠে, তাদের পুলিশি বাঁধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে৷ এদিন বেলা ১ টা থেকে মিছিল শুরু হয়ে তিন দিক থেকে মূল তিনটি মিছিল আসে।
বিধানসভা থেকে বেরিয়ে হেস্টিংস হয়ে কলকাতা থেকে বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার মুখে ব্যারিকেডের সামনে আটকে দেওয়া হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং হুগলির সাংসদকে। আটক করা হয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও লোকসভার সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। দীর্ঘসময় তাঁর পথ আটকানোর পরে তাঁদের দুজনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। এরপরে তাঁদের লালবাজারে নিয়ে আসা হয়। অপরদিকে সাঁতরাগাছি থেকে নবান্নর অভিমুখে যাত্রা শুরু করে বিজেপির বিশাল একটি মিছিল৷
সাঁতরাগাছি থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মিছিল সাঁতরাগাছি পৌঁছলে তাদের পথ আটকায় হাওড়া সিটি পুলিশ। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সাঁতরাগাছি এলাকা৷ সেখানে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে পুলিশকর্মী ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে৷ বিজেপি কর্মীদের রুখতে পুলিশ লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে৷ অপরদিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট বৃষ্টি করা হয় বিজেপি কর্মীদের থেকে। এরপর হাওড়ায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও।
নবান্ন অবধি যেতে না দেওয়ার রাগে শুধু পুলিশ কর্মীদের দিকে ইঁট ছোঁড়াতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বিজেপি সমর্থকরা। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের কিয়স্ক। উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের একজন পুলিশের গাড়ির ছাদে উঠে লাফালাফি করতে থাকেন। দেখা যায়, কয়েকজন বিজেপি কর্মী গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে কাপড় পেঁচিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, গাড়ির মধ্যেই রাখা ছিল পুলিশের টুপি। কয়েকজন যুবক কলকাতা পুলিশের সেই টুপিতেই আগুন ধরিয়ে দেন। একই সময়ে পুলিশের গাড়িতে পেট্রল ঢালতে থাকেন কয়েকজন। মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে পুলিশের আরসিপি ভ্যান। শেষমেষ বিজেপি কর্মীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ছোঁড়ে পুলিশও৷ সব মিলিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়া, সাঁতরাগাছি, কলকাতা চত্বর।