দক্ষিণবঙ্গের তিন বিধায়কের দলত্যাগে চাপে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি। উত্তরবঙ্গে ভাঙন রুখতে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ‘ঘর বাঁচাও’ বৈঠক ডেকেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু কার্যত হুইপ জারি করেও কাজ হল না। সেই বৈঠকে গরহাজির থেকে গেলেন বিজেপির ছ’জন সাংসদ এবং পাঁচজন বিধায়ক। আর এই অনুপস্থিতি নিয়ে উত্তরের রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপির তরফে লিখিত বার্তায় উত্তরবঙ্গের সাত জন সাংসদ এবং ২৯ জন বিধায়ক সহ মোট ৩৬ জন জনপ্রতিনিধিকে শিলিগুড়ির মাড়োয়ারি ভবনের বৈঠকে হাজিরার নির্দেশ জারি হয়েছিল।
কিন্তু দেখা গেল, একজন সাংসদ এবং ২৫ জন বিধায়ক নির্দেশ মেনে বৈঠকে অংশ নিলেন। গরহাজির ১১ জনপ্রতিনিধি। তাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের দু’জন, মালদহের দু’জন এবং আলিপুরদুয়ার জেলার এক বিধায়ক বৈঠকে ছিলেন না। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা ছাড়া আর কোনও সাংসদকেই বৈঠকস্থলে দেখা যায়নি। ফলে দলের একাংশে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আবার দল ছাড়ার হিড়িক উঠবে না তো?এ প্রসঙ্গে বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘সাংসদরা দিল্লিতে ব্যস্ত, তাই আসতে পারেননি। বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ি দিল্লিতে রয়েছেন। কুমারগ্রামের এমএলএ মনোজ ওঁরাওয়ের মাতৃবিয়োগ হয়েছে। গঙ্গারামপুর ও মালদহের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় এবং গোপাল সাহা শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৈঠকে যোগ দিতে পারেনি।’
হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মুকে এদিন কলকাতার পার্টি অফিসে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠকে দেখা গিয়েছে। মনোজ টিগ্গা আরও বলেন, ‘এই ঘটনা নিয়ে হইচই করা নিরর্থক। কারণ এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকা মানেই তৃণমূলে চলে যাওয়া নয়। তাছাড়া কে দল ছাড়ছে, তাঁর সঙ্গে এই বৈঠকের সম্পর্ক নেই। কেউ আসে, কেউ যায়। কিন্তু জনমত থেকে যায়। কোনও ব্যক্তির উপর বিজেপি নির্ভরশীল নয়। এটা ক্যাডার বেসড দল।’
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী এবং দলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির কনভেনার শ্যামচাঁদ ঘোষ, দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য রাজু বিস্তা উপস্থিত ছিলেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে একজন বিধায়ক বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ আলাদা রাজ্যের দাবি তুলছেন। কিন্তু অন্যদিকে দেখুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন। আমাদের অবস্থান ঠিক করতে হবে। একজোট হয়ে উত্তরবঙ্গের যাবতীয় সমস্যা ও সমাধানের পথ চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট জায়গায় জানাতে হবে। তবেই স্থানীয় রাজনীতিতে আমাদের গুরুত্ব থাকবে।’