বয়স মাত্র ৩০ বছর। ইচ্ছে ছিল হিমালয়ে পাড়ি দেওয়ার। তাই গত পাঁচ বছর ধরে কখনও জুতো, কখনও ব্যাগ, কখনও আবার গ্লাভস কিনেছিলেন। পাহাড়ে যাওয়ার দামী ‘মাউন্টেইন সাইকেল’ কিনতে পারেননি। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ছোটবেলার এক সহপাঠী। তিনিই উপহার দিয়েছেন ৪০ হাজার টাকার সাইকেল। এবার স্বপ্নপূরণের সফর। বারাকপুর থেকে সাইকেলে সুদূর লাদাখ পাড়ি দিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দাস। তাঁর মূল লক্ষ্য হল, এই যাত্রাপথে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করা। তাঁর উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটও।
নিমতা থানার বিরাটি এলাকায় তাঁর বাড়ি। তিনি নিমতা ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত। বাড়িতে রয়েছেন বাবা–মা। দিদি ও বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ট্রাফিক পোস্টে ডিউটি করে তিনি অনেক দুর্ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তারপরেই ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচির বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। সবারই সতর্ক হওয়া দরকার। মেনে চলা উচিত ট্রাফিক আইনও। তাই সমতল থেকে হিমালয়কে ছুঁয়ে এই কর্মসূচির প্রচার করতে চান তিনি।
বারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের অফিস থেকে তাঁর যাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা পতাকা নাড়িয়ে এর শুভ সূচনা করেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘সাইকেলে লাদাখ যাওয়া এবং ফিরে আসা খুবই কঠিন কাজ। সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি আমাদের রাজ্যে খুব ভালোভাবে চলছে। এবার আমরা পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও প্রচার করতে চাইছি। আমাদের সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দাস এই বার্তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার করবেন।’
এই বিষয়ে বিপ্লববাবু বলেন, ‘আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল সাইকেলে চড়ে হিমালয়ে যাব। লাদাখ ছিল আমার মূল টার্গেট। এই প্রথম লম্বা সফর। মোটরবাইকে করে অনেকেই লাদাখে বেড়াতে যান। তাই ভাবলাম, সাইকেল নিয়েই পাড়ি দেব। সাইকেল দূষণহীন। লাদাখে যেতে হলে অনেক জিনিস নিতে হয়। সেই সব জিনিস একসঙ্গে কিনতে পারিনি। পাঁচ বছর ধরে প্রতিমাসের বেতন থেকে অল্প অল্প করে টাকা বাঁচিয়ে একটা একটা করে জিনিস কিনেছি। আমার এক বন্ধু সাত মাস আগে সাইকেল উপহার দিয়েছে। এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।’
You must be logged in to post a comment.