তিন বছরে সব বদলে গিয়েছে। আগে কম করে ৫০ জন পার্সোনেল ঘিরে রাখত রাস্তায় বেরোলে। আজ তিনি প্রায় একা, কিন্তু লক্ষ্যে অবিচল। বিজেপির সঙ্গে ১৪ বছরের সম্পর্ক শেয় হয়ে যাওয়ার পর বিমল গুরুংয়ের পাখির চোখ তৃণমূলের জয়। শনিবার সকালেই দার্জিলিংয়ের পাতলেবাসের বুথে ভোট দিলেন বিমল গুরুং। চোখেমুখে দেখা গেল সেই চেনা আত্মবিশ্বাস। বললেন, ‘জয় নিশ্চিত আমাদের। পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে বিজেপি বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’
আপাতত মুখের কথাটা সত্যি করাই বড় চ্যালেঞ্জ বিমল গুরুংয়ের। কারণ পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ সালের উপনির্বাচনে দার্জিলিংয়ে যেতে বিজেপি। লোকসভাতেও তিনটি আসনেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু বিমল গুরুং জয় দেখছেন তাঁর নিজের যুক্তিতে। তাঁর কথায়, মানুষ পাহাড়ে শান্তি আর উন্নয়নের হয়ে ভোট দেবেন। দিদি সরকার গঠন করবে। পাহাড়ের ভোট পরিস্থিতি এবার কিছুটা ভিন্ন। গুরুংপন্থী মোর্চার বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী নামিয়েছে বিনয়পন্থী মোর্চাও। এই দুই শিবিরের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে জিএনএলএফ এবং সিপিআরএম। কিন্তু মূল লড়াইটা গুরুংপন্থী এবং বিনয়পন্থী মোর্চার মধ্যেই। দুই শিবিরই তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে চাইছে।
তৃণমূল নেত্রী সর্বান্তকরণে চেয়েছিলেন দুই মোর্চা যাতে এক হয়ে যায়। তা হয়নি। বিনয় শিবির প্রতীক হিসেবে পেয়েছে বাঁশি। আর তিনি পেয়েছন টেবিল। বিজেপির প্রতীক ভুলে পাহাড় কি এই নতুন প্রতীককে বাছবে! উত্তরটা এড়িয়ে গেলেন বিমল গুরুং। বরং প্রত্যাবর্তনের গল্প শোনালেন। বললেন, ২০১৯ সালের ভোট দিতে পারিনি। এবার ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে।। নিজের ঘরে ফিরে ভালো লাগছে আমার। এদিন তাঁকে খাদা পড়িয়ে দেন আশা গুরুং, তাঁর স্ত্রী। সঙ্গে ছিল দই আর মন্দিরের ফুল। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন গোটা পরিবার। আশেপাশে সেই আগের ভিড় নেই ঠিকই, বিনয় গুরুং আগের মতোই আছেন। তবে আগেকার মতো এখন আর আন্দাজই করা যাচ্ছে না কোন দল জিতবে। সেটার জন্য ২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
