শিক্ষকদের কম প্রতিবাদ-আন্দোলন দেখেনি রাজ্য। মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে যা ঘটেছে, তা ছিল একপ্রকার নজিরবিহীন। বিষপান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন ৫ শিক্ষিকা। এঁদের মধ্যে দু’জন এখনও বিপদমুক্ত নন। আত্মহত্যার চেষ্টা করা সেই শিক্ষিকাদের মামলার জল এবার গড়াল হাইকোর্টে। শিক্ষা দপ্তরের এসএসকে ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে কাজের রীতি ভাঙার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন জোৎস্না টুডু, শিখা দাস, পুতুল জানা-মণ্ডলরা।
মূলত স্থায়ীকরণের দাবিতে শুরু হয়েছিল, সেই আন্দোলনই এখন বদলি আটকানোর দাবিতে চলে এসেছে। অভিযোগ, আন্দোলনের সুর দমাতে বাড়ি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে উত্তরবঙ্গে তাঁদের বদলি করা হচ্ছে। কোন আইনে এই বদলি করা হয়েছে এই মামলায় সেটা জানতে চেয়েছেন মামলাকারীরা। এসএসকে ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের কাজের রীতি ভাঙারও অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই পাঁচ শিক্ষিকা-সহ বদলি হওয়া বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই মামলাটি শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। এবার আদালতে গিয়ে যদি সুরাহা হয়, এই প্রত্যাশা থেকেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিষপান করা ৫ শিক্ষিকার মধ্যে দু’জন সঙ্কটজনক অবস্থায় রইলেও শারীরিক অবস্থার খুব একটা অবনতি হয়নি বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। একজন ভর্তি রয়েছেন এনআরএস, অপরজন আরজিকর হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, অর্গানোফসফরাস জাতীয় কীটনাশক খেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। যা সাধারণত চাষের কাজে ব্যবহার হয়।
বিতর্ক অবশ্য আরও বেড়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্যে। সেই পাঁচ শিক্ষিকাকে ‘বিজেপি ক্যাডার’ বলে তোপ দাগেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই ঘটনা অনভিপ্রেত বলে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি। আর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, রাজ্যে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আছেন, মহিলাদের আরও সন্মান বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেখানে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষিকাদের।