প্রদীপের নিচের অন্ধকারটা এতদিন মানুষ বুঝতে পারছিল। কিন্তু ক্রমাগত তা সরকারি স্তর থেকে চেপে দেওয়া হচ্ছিল। আর সেই চাপতে গিয়ে আনলক করে দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীরা বারবার বলছিলেন পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপের দিকে যাবে। কর্নপাত করা হয়নি সেই সতর্কবার্তায়। আর আনলক করতেই হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে করোনা পরিস্থিতি। বাংলায় কনটেইনমেন্ট জোন বেড়ে যায় রাতারাতি। এবার পরিস্থিতি কঠিন বুঝতে পেরে রাজ্যবাসীর কাছেই কয়েকটি আবেদন রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার টুইট করে সেই আবেদন রেখেছেন তিনি। সেখানে তিনি জানান, কঠিন থেকে কঠিনতম হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। তাই প্রথম পদক্ষেপ— ভিড় বাসে যেন না ওঠা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ভিড় বাসে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। তিনি এই কথা বললেও সরকারি–বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি, অটো, ফেরি সবকিছু রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার সাবধানও করা হচ্ছে। ফলে মানুষ বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন।
তিনি দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসাবে বলেছেন, দরকার না থাকলে কেউ যেন না বেরোন। অযথা বাজারে ঘোরাফেরা করা, বন্ধুর বাড়ি গিয়ে গল্প কিংবা পাড়ার মোড়ে বসে আড্ডা যেন দেওয়া না হয়। অথচ শহর ও শহরতলির সব দোকান, বাজার, শপিং মল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, সেলুন থেকে বার কাম রেস্টুরেন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারি স্তরে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি এবং বেসরকারি সংস্থা প্রয়োজন বুঝে কর্মী সংখ্যা ঠিক করবে বলা হয়েছে। ফলে বাসে ভিড় বাড়ছে।
আর তৃতীয় পদক্ষেপ হিসাবে তিনি বলেন, বেসরকারি অফিসগুলি যেন ওয়ার্ক ফর্ম হোমের ওপর বিশেষভাবে জোর দেয়। কোনও কর্মী অফিসে দেরি করে এলে যেন তাঁকে ছাড় দেওয়া হয়। এই বিষয়টি সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও দেখা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই পদক্ষেপ কেন আগে নেওয়া হল না? বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে কেন বৈঠক করা হল না? এখন প্রদীপের নিচের অন্ধকারটা প্রকট হয়ে উঠেছে বলেই এমন ঘোষণা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।