জেলা ব্রেকিং নিউজ

সন্ধ্যায় ঘনীভূত হবে আমফান

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি নিম্নচাপ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সেটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। ঘূর্ণিঝড়টি আগামী কয়েকদিনে নানারকম ভোলবদল করতে পারে, গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় আমফান শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই ঘনীভূত হবে। এভাবে চললে সেটি উত্তর–পশ্চিম দিক বরাবর ১৭ তারিখ রবিবার পর্যন্ত থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ১৯ মে থেকে শুরুতে উপকূলীয় জেলায় এবং পরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল মৌসম ভবন। ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতাও দিয়েছে। ১৯ মে থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৮৫–৯০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বুধবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসকদের এই মর্মে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। ১৮ থেকে ২০ তারিখ ঘূর্ণিঝড় বাঁক নিয়ে উত্তর–পূর্ব দিকে এগোতে থাকবে। এই পাঁচ–ছ’‌দিন তামিলনাড়ু, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে একটানা ৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইবে।
শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার রেকর্ড জানাচ্ছে, সেটি দক্ষিণ–মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব এখন ১৩৫০ কিমি। আজ রাতের মধ্যেই এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সেটি আরও শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় এমনকী অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপও নিতে পারে। সমুদ্রে যাঁরা মাছ ধরতে গিয়েছেন, তাঁদের জন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার তিন দফায় শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত পেয়েছেন আবহবিদরা। সোমবার থেকে সাগরে কিছুটা বাঁক নিয়ে বাংলা–ওড়িশা লাগোয়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে চলে আসতে পারে আমফান। তারই পরোক্ষ প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছে রাজ্যে। তবে ঠিক কোথায় তা আছড়ে পড়বে সেটা এখনও স্পষ্ট হয়নি।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা পূর্বাভাস তাতে উপকূলীয় অঞ্চলে তো প্রবল ঝড়বৃষ্টি হবেই, সমুদ্র উত্তাল হবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এটি উত্তরপশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে। বিশাখাপত্তনমের অনেকটা কাছাকাছি চলে আসার পর সেটি একটি বাঁক নেবে। বিপদটা লুকিয়ে রয়েছে ওই বাঁকেই। কারণ পূর্বাভাস বলছে, বাঁক নেওয়ার পর সেটি উত্তর–উত্তরপূর্ব দিকে এগোতে থাকবে। অর্থাৎ তার অভিমুখ থাকবে বাংলার দিকেই।
পূর্বাভাস পেয়েই সতর্ক হচ্ছে রাজ্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, মৌসুনি দ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপের বেহাল নদী এবং সমুদ্র বাঁধের পাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। মাইকেও প্রচার করা হবে। তৈরি রাখা হচ্ছে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল। সুন্দরবনের প্রতি ব্লকে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।