দেশ ব্রেকিং নিউজ

অস্ত্র পাচারে বারের নর্তকীর হাত–যশ

পানশালায় বসে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রের ‘ডিল’ করত পাঞ্জাবের কুখ্যাত জয়পাল সিং ভুল্লারের গ্যাং। বার ডান্সারের গাড়িতে করে সেই আগ্নেয়াস্ত্র পাচার হতো নির্দিষ্ট ডেরায়। গোটা বিষয়টি দেখভাল করত গ্যাংস্টার ভুল্লারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ভরত কুমার। পানশালার ওই নর্তকী তারই বান্ধবী। তদন্তে নেমে এই চাঞ্চল্যকর  তথ্য হাতে এসেছে পাঞ্জাব পুলিশের।

ভরতকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি পানশালায় বসে আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচার ‘ডিল’ চূড়ান্ত করেই ভরত পাঞ্জাব পাড়ি দিয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। পাঞ্জাব থেকে বাংলা সহ ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া পানশালার গায়িকা–নর্তকীদের একাংশকে অস্ত্র পাচারের কাজে ব্যবহার করত ভুল্লার গ্যাং।

এই বার সিঙ্গার–ডান্সারদের খোঁজ চলছে। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের কাজে ভরতের আত্মীয় এক শিল্পীও সাহায্য করত জয়পালকে। তার ভূমিকা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। ভরত কুমারকে জেরা করে অফিসাররা জানতে পারছেন, সাধারণত ডিল করার সময় জয়পাল প্রথমে কোনও অস্ত্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলত না। তবে বিদেশি অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যতিক্রম হতো। পুলিশকে এড়াতে অ্যাপল ডিভাইসে ফেসটাইম ব্যবহার করে তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলত এই গ্যাংস্টার। প্রথম দফায় দেশের মধ্যেই চলত তার পাচারের নেটওয়ার্ক। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে কোথায় বসে আলোচনা হবে, জয়পালের কথামতো তা ঠিক করত ভরত।

পুলিশ সূত্রে খবর, অস্ত্র কিনতে আগ্রহী ব্যক্তিকে সাধারণত পাঞ্জাব বা হরিয়ানার কোনও পানশালায় ডেকে পাঠানো হতো। যদি সেই ব্যক্তি বাংলার বাসিন্দা হতো, সেক্ষেত্রে ভরতের পরিচিত এখানকার কোনও পানশালার বিশেষ চেম্বারে বসে চলত কথাবার্তা। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকত ভরত। দরদাম চূড়ান্ত হওয়ার পর আগ্নেয়াস্ত্র কোথায়, কীভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে, তা জানিয়ে দিত সে। পানশালাগুলির মালিকরাও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রের ক্রেতা জোগাড় করতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

অর্ডারমতো অস্ত্র নিয়ে যেত ভরতের সেই বান্ধবী। সেই যুবতী পানশালার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় জলসা এবং অনুষ্ঠান করতে যেত। গোপন ডেরা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বান্ধবীর গাড়িতে তুলে দিত ভরত। হাইওয়ে ধরে তা পৌঁছে যেত বাংলা–সহ ভিন রাজ্যের বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের ডিলারদের কাছে। আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গেই পাচার হতো নিষিদ্ধ মাদক। ভরতের ওই বান্ধবীর নখদর্পণে। তাই তাকে দিয়েই এই রাজ্যে ‘আর্মস’ পাঠানো হতো। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু ‘এসকর্ট গার্ল’-এর নামও এসেছে পাঞ্জাব পুলিসের হাতে।