বিনোদন

বাংলাদেশের তারকা দম্পতি করোনা আক্রান্ত

বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলন ও অভিনয় জগতের দুই গুরুত্বপূর্ণ তারকা রামেন্দু মজুমদার ও ফেরদৌসী মজুমদার আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে। এই দম্পতি এখন তাদের ফ্লাটে আইসোলেশনে রয়েছেন। গত মাসে নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ এলেও এখন কোনো উপসর্গ নেই বলে জানিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার।

তিনি বলেন, “গত ১৮ জুলাই প্রথমে আমার স্ত্রীর করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তার এক সপ্তাহ পর আমার নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এখন আমরা দুজনেই সুস্থ আছি। বাড়িতে স্বাভাবিকভাবেই সব কাজকর্ম করছি।”

আগামী কিছু দিনের মধ্যেই দ্বিতীয়বার নমুনা পরীক্ষা করাবেন বলে জানিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার।

ফেরদৌসী মজুমদারের বয়স এখন ৭৭ বছর, আর রামেন্দুর ৭৯। বাংলাদেশের মঞ্চ ও টিভি নাটকের এই দুই তারকার বিয়ে হয় ১৯৭০ সালে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে নাট্যকার আবদুল্লাহ আল মামুন নাটকের দল থিয়েটার গঠন করলে রামেন্দু-ফেরদৌসী তার অগ্রভাগে ছিলেন।

অভিনয় জগতে পাঁচ দশকের পথচলায় ফেরদৌসী মজুমদার মঞ্চ ও টেলিভিশনে ‘কোকিলারা’, ‘এখনো ক্রীতদাস’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘জীবিত ও মৃত’, ‘বাঁচা’, ‘যোগাযোগ’, ‘সংশপ্তক’, ‘চোখের বালি’, ‘নিভৃত যতনে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘এখনও দুঃসময়’, ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ সহ বহু নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। অভিনয় শিল্পে ভূমিকার জন্য ১৯৯৮ সালে তিনি একুশে পদক এবং ২০২০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

রামেন্দু মজুমদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। পরে তিনি বিজ্ঞাপন শিল্পে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এই অভিনয় শিল্পী ১৯৭২ সালে বিটপী অ্যাডভার্টাইজিংয়ে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। পরে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এক্সপ্রেশানস। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি টিভি নাটকে ছিলেন নিয়মিত। বাংলাদেশের নাটককে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি করাতে রামেন্দু মজুমদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ১৯৮২ সালে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট- আইটিআই এর বাংলাদেশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। এখন তিনি এই সংগঠনের সাম্মানিক সভাপতি। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রামেন্দু মজুমদার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য। নাট্যচর্চায় অবাদনের জন্য তিনি ২০০৯ সালে তিনি একুশে পদক পান।