বাংলাদেশ

আমফান নিয়ে ত্রস্ত বাংলাদেশ

করোনা আবহের মধ্যেই স্মৃতি উসকে আতঙ্কে এখন পদ্মাপারের বাসিন্দারা। কারণ ওখানে আসার কথা ঘূর্নিঝড় আমফানের। তাই মনে পড়ে যাচ্ছে ১৫ নভেম্বর, ২০০৭ সালের কথা। দিনটা এখনও ভুলতে পারেন না পদ্মাপারের মানুষজনরা। কারণ সুন্দরবন লাগোয়া জায়গাগুলির বাসিন্দাদের কাছে এখনও টাটকা ওই দিনের ভয়াল স্মৃতি। নাম ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’। যার দাপটে পুরো তছনছ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ উপকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
সেই ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ প্রভাব ফেলেছিল বরিশাল, খুলনার মতো শহরে। সরকারি হিসেবেই মারা গিয়েছিলেন সাড়ে তিন হাজার মানুষ। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি বছর। পদ্মাপার দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। ১৩ বছর পর আবারও সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড় অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য। এই মধ্যবর্তী সময়ে আয়লা, বুলবুল, ফণীর মতো ঝড়ও বাংলাদেশ দেখেছে। যা আমফানের শক্তির কাছে নেহাতই তুচ্ছ।
সমস্যাটা হল বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ২২ হাজারের বেশি। এখন ঘূর্ণিঝড় এলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণশিবিরে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে। শারীরিক দূরত্ব যাতে বজায় থাকে সে জন্য আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ এনামুর রহমান। বাংলাদেশের আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরে ০৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‌আশ্রয়কেন্দ্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতে মানুষজনকে ঠাঁই দেওয়া যায় তার জন্য এবার কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেই মর্মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপকূলীয় জেলাগুলির জেলা প্রশাসকদের ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’‌ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার সময়ে যাতে কারও খাবারের কোনও অভাব না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার এবং দুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনার কারণে বর্তমানে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেই বাড়িগুলোতেও ঘূর্ণিঝড়ের আশ্রয়স্থল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার সকাল ১১টায় ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল থেকে ১১৪৭ কিমি দক্ষিণ–পশ্চিম আর খেপুপাড়া থেকে ১০৬০ কিমি দক্ষিণ–দক্ষিণপশ্চিমে রয়েছে। বুধবার দুপুর থেকে রাতের মধ্যে এটি পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী কোনও অঞ্চল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।