ছোট থেকে ছবি আঁকাই তার নেশা। ছবি এঁকে একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছেন জীবনে। পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ৩২ টির মত পুরষ্কার। আর এবার পিঁপড়ের ছবি এঁকে বঙ্গ গৌরব সম্মানে ভূষিত হলেন কাকদ্বীপের যুবক দেবরাজ বেরা। দেবরাজের এই সাফল্যে খুশি তার পরিবারের লোকজন ও কাকদ্বীপবাসী।
ছোট থেকেই অভাবকে সঙ্গী করে বড়ো হয়েছেন দেবরাজ। দেবরাজের বাবা পেশায় ছিলেন ভ্যানচালক। অভাবের সংসারে দেবরাজও মাঝে মধ্যেই বাবাকে সহযোগিতা করতে ভ্যান চালিয়েছেন। ট্রেনে হকারিও করেছেন। তার মধ্যেও তিনি আঁকা ছাড়েননি। অতীতের সেসমস্ত কথা আজও ভোলেননি দেবরাজ। আজও প্রিয় ভ্যানটি যত্ন করে তুলে রেখেছেন বাড়ির সামনেই।
দেবরাজের কাজ মূলত ৩-ডি পেন্টিং এর উপর। অনেকেই বলেন, দেবরাজ এমন ভাবে ছবি আঁকেন, দেখলে মনে হবে সেগুলি জীবন্ত। পিঁপড়ের মত ক্ষুদ্র প্রাণীর নিয়ে তিনি কাজ করেছেন, ছবি আঁকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের চলাফেরা। আর যার সাফল্য হিসাবে তিনি পেয়েছেন এই বঙ্গ গৌরব সম্মান। এর আগেও একাধিক পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি।
শুধুমাত্র এই সাফল্য নিয়ে থেমে থাকতে চাননা তিনি। ভবিষ্যতে ছবি আঁকার মাধ্যমে আরও ভালো কাজ করে এগিয়ে যেতে চান তিনি। ছবি আঁকা সম্বন্ধে সকলকে উৎসাহিত করতে কাকদ্বীপে তিনি একটি স্কুল খুলেছেন তিনি। সুন্দরবন আর্ট অ্যাকাডেমি নামের সেই স্কুল নিজেই পরিচালনা করেন তিনি। তবে অর্থের অভাবে সেই স্কুলটিকে বড়ো আকারে গড়ে তুলতে পারছেননা তিনি। বর্তমানে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোনায় এই স্কুল কোনোরকমে চালাচ্ছেন তিনি। ভবিষ্যতে স্কুলটিকে আরও বড় করে গড়ে তোলার স্বপ্ন রয়েছে তাঁর।
এ নিয়ে দেবরাজ বেরা জানান বঙ্গ-গৌরব সম্মান পেয়ে তিনি খুবই খুশি। সকলের কাছে তাঁর বার্তা ছবি এঁকেও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। দারিদ্র্যকে খুব কাছ থেকে দেখার স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেননি তিনি। সেজন্য তাঁর স্কুলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের কেউ ছবি আঁকা শিখতে এলে বিণামূল্যে তাঁকে ছবি আঁকা শেখাতে চান। প্রতিবন্ধী ও দু:স্থদের ও বিনামূল্যে ছবি আঁকা শেখাতে চান তিনি। ছবি আঁকাকে জীবনের পাথেয় করে ভবিষ্যতে আরও কাজ করতে চান তিনি।