এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যখন উত্তাল রাজ্য রাজনীতি, ঠিক সেসময়ই বাবার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে শিক্ষকতার চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি খোয়া যায়। এরপরই অঙ্কিতার পদে মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন ববিতা সরকার।
এবার সেই ববিতার চাকরিও সঙ্কটে। জানা গিয়েছে, ববিতার মার্কশিট প্রকাশ্যে আসার পরই দেখা গিয়েছে যে তাঁর প্রাপ্ত নম্বরেও রয়েছে গরমিল। ববিতার প্রাপ্ত নম্বরের থেকে অ্যাকাডেমিক স্কোর বেশি রয়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে। ববিতার এডুকেশনাল স্কোর হয়েছে ৩১। কিন্তু কমিশনের তরফে ববিতাকে ৩৩ নম্বর দেওয়া হয়েছে। ববিতা সরকারের মার্কশিটে দেখা গিয়েছে, মোট ৮০০-এর মধ্যে তিনি ৪৪০ পেয়েছেন। এতেই তাঁর অ্যাকাডেমিক স্কোর গণনায় ভুল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হয় মেধা তালিকা। সেখানেই ওয়েটিং লিস্টে ববিতার নাম ছিল। প্যানেল লিস্টে থাকা প্রার্থীদের চাকরির পর ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থীদের ডাকা হয়। ববিতার নাম ছিল ২০ নম্বরে। কিন্তু, দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর ববিতা জানতে পারেন তাঁর নাম ২১ নম্বরে চলে গিয়েছে। তারপরই ববিতা জানান মন্ত্রীকন্যা পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৬১ নম্বর। কিন্তু তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭৭। সেক্ষেত্রে কেন তাঁকে নিয়োগ করা হল না! এই বিষয় নিয়েই আদালতে দ্বারস্থ হন ববিতা। প্রায় ৪৩ মাস চাকরি থেকে বঞ্চনা করা হয় ববিতা সরকারকে।
উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় নজিরবিহীন রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। মাত্র সাত দিনের মধ্যে অঙ্কিতা অধিকারীর জায়গায় ববিতা সরকারকে নিয়োগ করতে হবে, এমনটাই জানিয়ে দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া বেতনের টাকা ১০ দিনের মধ্যে সুদ সহ ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এরপর অঙ্কিতা অধিকারী শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেওয়ার দিন থেকে পাওয়া সমস্ত বেতন সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধা ববিতা সরকারকে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তারপরই আদালতের নির্দেশে অঙ্কিতা প্রথম এবং দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ববিতা সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়।