রাজ্য

তৃণমূল–বিজেপি সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হালিশহর

রবিবার রাতে তৃণমূল–বিজেপি সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের হালিশহর। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গাড়ি–সহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ও বাইক ভাঙচুর করা হয়। সোমবার সকাল থেকে বলিদাঘাটার পুরো এলাকা থমথমে। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চাপা উত্তেজনায় এলাকার দোকানপাট পুরো বন্ধ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হালিশহর বলদেঘাটার কাছে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া এক নেতার বাড়িতে বিজেপি’‌র কর্মিসভায় যোগ দিতে আসেন অর্জুন সিং। বিজেপি’‌র অভিযোগ, বাইরে গাড়ি রেখে সাংসদ যখন ভেতরে বৈঠক করছিলেন তখন তৃণমূলের লোকজন অর্জুন সিংয়ের গাড়ি ভাঙচুর করে। দলীয় সাংসদ অর্জুন সিংয়ের উপর হামলার প্রতিবাদে কাঁচরাপাড়া–বারাকপুরের ৮৫ নং বাসরুট দফায় দফায় অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা। যার ফলে সপ্তাহের প্রথমদিনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় অফিসযাত্রীদের।
সাংসদের সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের দু’টি গাড়িতেও ভাঙচুর চলে। পাল্টা ঘটনাস্থলে তৃণমূলের ছাত্রপরিষদ রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখায়। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয় তৃণমূলের ছাত্রপরিষদ। গাড়ি ভাঙচুরের খবর পেয়ে বিজেপির লোকজন দলীয় সভা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপিই প্রথম অশান্তি শুরু করেছিল। বিজেপির কর্মী–সমর্থকদের হাতে গাড়ি ও বাইকেও ভাঙচুর চলে।
আবার পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন সাংসদ অর্জুন সিং। এতেই এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি তৃণমূলের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটে। অভিযোগ যথেচ্ছভাবে গুলি এবং বোমা ছোড়া হয়। পুলিস সহ আহত হয়েছেন অনেকেই। অর্জুন সিং বলেন, ‘সুবোধ অধিকারীর নেতৃত্বে একদল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী এ দিন আচমকা হামলা চালায়। গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি আমাকে অপদস্থ করা হয়। আমার নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়িও ভেঙে দেওয়া হয়।’‌ পাল্টা বীজপুর বিধানসভা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুবোধ বলেন, ‘আমি বলদেঘাটা দিয়ে গাড়ি করে যাওয়ার সময় বিজেপি’‌র লোকজন আচমকা আমার গাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে আমাদের দলের কর্মীরা এলে তাদেরও মারধর করা হয়।’‌
পুলিশ অর্জুন সিংকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায়। প্রায় এক ঘন্টার সংঘর্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ঘোষপাড়া রোড। বিজেপি সাংসদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগুন নিয়ে খেলছেন। এই লাইনে খেলা বন্ধ করুন। এতে বাংলা জ্বলছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে বাংলার মানুষের। উনি আমাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছেন। তৃণমূলের নেতা এবং বীজপুরের পর্যবেক্ষক সুবোধ অধিকারী দাবি করেন, বারাকপুর জুড়ে বিজেপি এবং অর্জুন সিংয়ের উপর আস্থা হারিয়ে দলে বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। এতে পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে ফেলে পরিকল্পিতভাবে গুন্ডা দিয়ে এলাকা দখল করতে এসেছিল অর্জুন সিং।