দেশ লিড নিউজ

আড়াই ঘন্টার লুকোচুরি খেলায় কমিশনকে হারালেন অনুব্রত

খেলে দিলেন দিদির ভাই কেষ্ট। সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা লুকোচুরি খেলার পর শেষপর্যন্ত খোঁজ মিলল নজরবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের। রীতিমত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘামিয়ে দিয়ে অনুব্রত শেষপর্যন্ত দেখা দিলেন তারাপীঠ মন্দিরে। এই নাকানিচোবানি খাওয়াবে বলেই তিনি বলেছিলেন, নজরবন্দি মানে তো গৃহবন্দি নয়। খেলা হবে। সেই খেলাতে আপাতত ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিলেন নির্বাচন কমিশন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটকে।
জানা গিয়েছে, সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যে লুকোচুরি ‘খেলা’ শুরু করেছিলেন কেষ্ট, তা দুপুর ২টো নাগাদ তারাপীঠ মন্দিরে শেষ হল। তারপর তাঁকে আবারও নজরবন্দি করল কমিশন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ এত বড় চেহারার একটা লোক বাড়ি থেকে বেরিয়ে তারাপীঠে চলে গেল কেউ দেখতেই পেল না। তাহলে এটা কিসের নজরদারি?‌
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল সাতটা পর্যন্ত ‘নজরবন্দি’ থাকার কথা ছিল অনুব্রতের। বুধবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি যখন বাড়ি থেকে বেরোন, তাঁর গাড়ির সঙ্গেই ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর আটজন জওয়ান। তাঁরা অবশ্য অন্য গাড়িতে ছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ যাওয়ার পর একটি রাস্তার বাঁকে উধাও হয়ে যায় তাঁর গাড়ি। দীর্ঘক্ষণ তাঁর গাড়ি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেও তা খুঁজে বের করতে পারেনি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই ঘটনায় স্থুলুস্থুলু পড়ে যায়। কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অনুব্রতের একজন নেতাকে কীভাবে ‘নজরবন্দি’ করা হল যে তিনি বাড়ি থেকে বেরনোর কয়েক মিনিটের মধ্যে চোখ এড়িয়ে গায়েব হয়ে গেলেন?
এখন প্রশ্ন, প্রায় আড়াই ঘণ্টা কোথায় ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল? তিনি কি মন্দিরেই ছিলেন? নাকি অন্য কোথাও? সূত্রের খবর, তিনি প্রথমে নানুরে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে লাভপুর। সেখান থেকে তিনি চলে যান ইলামবাজার। তার পর সেখানে থেকে তিনি চলে আসেন তারাপীঠে। সেখানে পুজোও দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। মন্দির থেকে বেরিয়ে দরজায় মাথা ঠেকাতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। মন্দির থেকে বেরিয়ে তিনি চলে আসেন তারাপীঠের ইন্দ্রানী লজে।
সূত্রের খবর, বুধবার অনুব্রতকে নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন। তাঁকে নজরদারির নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে। ভিডিয়োগ্রাফির মাধ্যমে অনুব্রতের উপর নজর রাখা হবে। সঙ্গে থাকবেন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রিট এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ঠিক কারণে এই লুকোচুরি তা বোঝা যাচ্ছে না। এই নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‌তারাপীঠে পুজো দিতে এসেছিলাম। মায়ের কাছে যা চাওয়ার তা চেয়েছি। এটা সবাইকে বলার নয়।’‌