Today Central visiting team send two letters to state chief secretary and asked various questions.
ব্রেকিং নিউজ রাজ্য

রাজ্যকে জোড়া চিঠি কেন্দ্রীয় দলের

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কীসের ভিত্তিতে মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ হচ্ছে?‌ বাংলায় আসা ইস্তক নবান্নের কাছে জানতে চাইছিল কেন্দ্রীয় টিম। এমনকী রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। প্রথম চিঠিতেই প্রশ্ন উঠেছে রাজারহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও বাঙ্গুর হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে।
আন্তঃমন্ত্রক টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠিতে জানান, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি তাঁদের বলেছিলেন, কোনও কোভিড রোগী পথ দুর্ঘটনায় মারা যান, তা হলে বলা যায় না এই ব্যক্তির কোভিডে মৃত্যু হয়েছে। বাঙ্গুর হাসপাতালের কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে চিঠিতে অপূর্ব চন্দ্র লিখেছেন, ‘‌কয়েকজন বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন, অথচ তাঁদের টেস্ট রিপোর্ট এখনও আসেনি। কয়েকজনের টেস্ট নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে রয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব ঠিকভাবে মানা হচ্ছে না।’‌
প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির যুক্তি শুনে কেন্দ্রীয় টিমের সদস্যরা যে বিস্মিত হয়েছিলেন তা চিঠির বক্তব্যেই বোঝা গিয়েছে। যে সমস্ত কোভি়ড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুকে অন্য কারণে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে তাঁদের কেস রিপোর্টও চেয়েছে কেন্দ্রীয় টিম। মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য নবান্ন যে অডিট টিম গঠন করেছে, তার সদস্যের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় টিমের সদস্যরা। কীভাবে, কিসের ভিত্তিতে এই কমিটি গঠন করা হল এই কথাই জানতে চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। কোন পদ্ধতিতে কাজ করছে অডিট কমিটি, জানতে চায় কেন্দ্রীয় দল।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৫৭ জন রোগীর এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যুর কারণ কোভিড। বাকি ৩৯ জনের শরীরে কোভিডের উপস্থিতি ছিল ইন্সিডেন্টাল। অর্থাৎ হৃদরোগ বা কিডনি ফেল করার মতো রোগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যসচিব জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় দল এর পর তথ্য চেয়ে ইমেল করলে তথ্য দিয়ে দেবে রাজ্য।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় টিম নবান্নের থেকে পাঁচটি বিষয় জানতে চেয়েছে। তা হল—১) করোনায় আক্রান্তদের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকদের কমিটি গঠনের যে নির্দেশ/বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল নবান্ন, তার প্রতিলিপি দিতে হবে। ২) করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুকে অন্য কারণে মৃত বলে ঘোষণা করেছে কমিটি তার কেস রেকর্ড। ৩) কোনও করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য কত সময় নিচ্ছে অডিট কমিটি? ৪) বাংলায় অন্য কোনও রোগে মৃত্যুর ক্ষেত্রেও কি এভাবে কোনও কমিটি মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখে? ৫) এই ধরনের কমিটির গঠন কি আইসিএমআরের গাইডলাইন মেনে হয়েছে? এখন উত্তর দেওয়ার পালা রাজ্য সরকারের। এরই সঙ্গে শনিবারের দিত্বীয় চিঠিতে দিল্লির নিজামুদ্দিন থেকে রাজ্যে ফেরারদের করোনা পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন ও তাঁদের সংস্পর্শে আসাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এদিকে উত্তরবঙ্গ সফররত কেন্দ্রীয় দলের প্রধান বিনীত জশী  মুখ্যসচিবকে আজ এক চিঠিতে জানিয়েছেন-

১) জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনার, দার্জিলিঙয়ের জেলা শাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা এখনও মেলেনি।

২) শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া হলেও, তিনি এখনও সময় দেননি।

৩) জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় কতজন করোনা-আক্রান্ত ?

৪) উত্তরবঙ্গে কতজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন ?

৫) ১ মার্চ থেকে মোট কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে ? তাঁদের মৃত্যুর কারণ কী ?

৬) ৩ জেলায় কত কোভিড হাসপাতাল আছে ? তাতে বেড সংখ্যা কত ? কত আই সি ইউ বেড ও ভেন্টিলেটর রয়েছে ? করোনা পরীক্ষার টেস্ট কিট কত রয়েছে ?

এরকম আরও বেশ কিছু তথ্য ও জানতে চাওয়া হয়েছে। এখন দেখার রাজ্য সরকার কি উত্তর দেয়।