টেট দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করছে সিবিআই। দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের তাবড় মন্ত্রী থেকে একাধিক নেতা ও তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের। টেট দুর্নীতি নিয়ে যে মুহূর্তে সিবিআই এর রেডারে থাকা বাগদার চন্দন মন্ডলকে নিয়ে বহুল চর্চা চলছে, ঠিক সেসময় চাকরি পাইয়ে দেওয়া ও ট্রান্সফারের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল বনগাঁর তৃণমূল কংগ্রেস আদিবাসী নেতা এক হাই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ফেসবুকে ভাইরাল ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বাগদার চন্দন কে নিয়ে তো সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। বনগাঁর ছয়ঘড়িয়াতে একজন ‘চন্দন’ আছে, যে বনগাঁ হাইস্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ও ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। পোস্ট মারফৎ বনগাঁর এই চন্দনকে নিয়েও সিবিআই তদন্তের দাবিও তোলা হয় ফেসবুক পোস্টে।
মনে করা হচ্ছে, নাম উল্লেখ না করে অভিযোগের তির তৃণমূল নেতা ও শিক্ষক সুকান্ত মাহাতোর দিকে। সুকান্ত মাহাতোর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলার দেবদাস মণ্ডল। তার কথায়, “সুকান্ত (গোপাল) মাহাতো চাকরি দেওয়ার নাম করে ও ট্রান্সফার করিয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছে। আমরা মহামান্য হাইকোর্ট ও সিবিএই -এর কাছে আবেদন করব, একে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তদন্ত করলে তৃণমূলের অনেক রাঘব বোয়ালের নাম জানা যাবে।”
বিশ্বজিৎ বসু নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ তোলেন, তার নিকট আত্মীয় বনগাঁর সুকান্ত (গোপাল) মাহাতোকে মুর্শিদাবাদ থেকে ট্রান্সফার করিয়ে দেওয়ার জন্য ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত না পাওয়ায় শেষমেশ বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
এবিষয়ে বনগাঁ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্য বলেন, “আমি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।এই পার্টের ৩ জনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে এই মাহাতো। পরবর্তীতে জানতে পেরে আমি তাকে বলেছিলাম এই ওয়ার্ড থেকে এই ধরনের কাজকর্ম চলবে না।”
যদিও এই বিষয়ে অভিযুক্ত নেতা সুকান্তর সাফাই, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন, “আমি আদিবাসী সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করি। আমি দলের সঙ্গেই আছি। যারা অভিযোগ করছে তারা কংগ্রেস করে। বিরোধী দল থেকে অভিযোগ তুলতেই পারে। যদি অভিযোগ থাকে তবে প্রমাণ দেখাক।”
এদিকে বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেছেন, “তার বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে তারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হোক। দল বিরোধী কথাবার্তা যারা বলছে তারা দলে থেকে দলের সঙ্গে গাদ্দারি করছে। এই ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।”