রাজ্য

অমিতের মধ্যাহ্নভোজে হিমশিম নবীন

শুক্তো, মুগের ডাল, বেগুন ভাজা, পনিরের তরকারি, চাটনি ও পায়েস। শুক্রবার দুপুরে অতিথি অমিত শাহর জন্য এমনই বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা রাখছেন নবীন বিশ্বাস। তবে অমিত শাহকে বাংলার ডেলিকেসি নলেন গুড়ের পায়েস খাওয়াতে হন্যে নবীন বিশ্বাস। কারণ, বাজারে এখনও দেখা মেলেনি গুড়ের। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে বাগুইআটি থানার জগৎপুর শিমুলতলা আদর্শপল্লিতে ওই ব্যক্তির বাড়িতেই যে মধ্যাহ্নভোজ করার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য রাঁধবেন নবীনের স্ত্রী সুচন্দ্রা। তাঁদের বাড়ির অদূরে, মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু হরিচাঁদ–গুরুচাঁদ ঠাকুর স্মরণে গড়ে ওঠা শ্রীহরি মন্দিরে। নবীনদের উদ্যোগেই ৩০ বছর আগে এই শ্রীহরি মন্দির গড়ে ওঠে। তিনি খানিক গর্বের সঙ্গেই বলে থাকেন, ‘‌আমি একজন মতুয়া। এই সম্প্রদায়ের একজন সেবক।’‌
মাটির থালা–বাটিতে অমিত শাহকে দেওয়া হবে শুক্তো, ছোলার ডাল, বেগুন–ভাজা, মুগের ডাল, পনিরের তরকারি আর জলপাইয়ের চাটনি। থাকবে বাসমতি চালের ভাত এবং রুটি দুই। শেষপাতে থাকবে নলেন গুড়ের পায়েস। প্রাক শীত মরশুমে বাজারে এখনও ওঠেনি নতুন গুড়। তাই বাঙালির এই সিগনেচার পদটির সঙ্গে গোটা দেশের পরিচিতি ঘটাতে দু’দিন ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঘুরতে হচ্ছে আসবাব ব্যবসায়ী নবীনবাবুকে। এই ব্যক্তির তিনতলা বাড়ি এখন কার্যত একটা দুর্গের চেহারা নিয়েছে। এই বাড়ির তিনতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে একবারের জন্য হলেও সাধারণ মানুষের অভিবাদন গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হবে অমিত শাহকে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার ওই বাড়ির প্রত্যেকের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন নবীনবাবু।
আজ, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া সফরে শহরের অদূরে চতুরডিহি গ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে দুপুরের আহার সারবেন শাহ। বিভীষণ বলেন, ‘‌দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার বাড়িতে আসবেন, এই খবর খুবই আনন্দের। সাধ্যমতো ওঁকে আপ্যায়ন করব।’‌ বিভীষণের স্ত্রী মনিকা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজনের মেনুতে থাকছে ভাত, ডাল, শাক–সবজি, পোস্ত, কুমড়োর ঝাল, চাটনি। আর নবীন বিশ্বাস জানান, অমিতজিকে বলব, হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে আইন করায় আমরা নরেন্দ্র মোদী এবং ওঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। এটা মতুয়াদের দীর্ঘদিনের দাবি। ওঁকে বলব, এবার নাগরিকত্বের কাগজ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
নবীনের বাড়ির চারপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির ছাদের দখল সাময়িকভাবে নিয়ে নেবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। বাড়ির চারপাশ মুড়ে ফেলা হবে নিরাপত্তার চাদরে। এই একই ব্যবস্থা হরি গুরুচাঁদের মন্দিরেও। মন্দির কমিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, খালি পায়ে প্রবেশ করবেন অমিত শাহ। মাটিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে রীতি অনুযায়ী। প্রবেশের সময় ২০০ জন মহিলা লালপাড় সাদা শাড়ি পরে তাঁকে স্বাগত জানাবেন। থাকবে মতুয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মেনে ডঙ্কাবাদন এবং নিশান ওড়ানোর ব্যবস্থা। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত থেকে জীবাণুমুক্ত করেছেন তিনতলা বাড়ি। ৪৫ বছরের নবীন বিজেপি’‌র সক্রিয় সদস্য নন, তবে এলাকায় পরিচিত বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্তের অনুগামী হিসেবে।