মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধান। তার মধ্যে দ্বিতীয়বার। ফের অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। শনিবার সকাল ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। হঠাৎ কেন এই দ্বিতীয় দফার সাক্ষাৎ? রাজ্যপালের গতিবিধি বাড়াচ্ছে জল্পনা। সূচি অনুযায়ী তিনদিনের দিল্লি সফর সেরে শুক্রবারই কলকাতায় ফেরার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু এদিন তিনি ফেরেননি।
শনিবার সকালে টুইট করে জানান, দুপুরে কলকাতা ফিরছেন। তবে তার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন।রাজ্যপালের এবারের নয়াদিল্লি সফর একটু হলেও ভিন্নরকমের বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রত্যেকবার বিভিন্ন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তবে এবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেও সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি রাজ্যপাল। ফলে ধনকারের কার্যকলাপ ঘিরে বাড়তি জল্পনা তৈরি হয়েছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের ভোট পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী–সহ ৫১ জন বিজেপি বিধায়ক। এরপর রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়ান জগদীপ ধনকার।
এদিন টুইটারে রাজ্যপাল লেখেন, সকাল ১১টায় অমিত শাহের বাড়িতে তাঁদের বৈঠক রয়েছে। তার পরই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি। মঙ্গলবার হঠাৎই রাজভবনের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের দিল্লি সফরের কথা জানানো হয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তার আগের দিনই বিজেপির বিধায়ক দলের সঙ্গে রাজ্যপাল তাঁর বাসভবনে দেখা করেন। বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে অভিযোগও করেন শুভেন্দু অধিকারীরা। বুধবার নয়াদিল্লি পৌঁছে পরদিনই অমিত শাহের বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন রাজ্যপাল। প্রায় দেড় ঘণ্টা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কয়লা ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের খবর, বৈঠকে রাজ্যের শাসকদলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কয়লা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন জগদীপ ধনকার৷ এরপর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণকুমার মিশ্রের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।
আবারও শনিবার আরেক দফা বৈঠক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের দ্বিতীয় বৈঠক নিঃসন্দেহে আলাদা তাৎপর্যের দাবিদার। যখন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব স্বয়ং রাজ্যপাল, তখন তাঁর এই বৈঠকগুলি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে কী রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ফেলে দিতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে? নাকি আরও কোনও নেতা–মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা নীল নকশা তৈরি হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।