বৃহস্পতিবার কোচবিহারে অমিত শাহের সফর ঘিরে ফের এই ইস্যুই উসকে উঠল। কোচবিহারের রাসমেলার ময়দান থেকে তিনি তুললেন গগনভেদী ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। আর বললেন, ‘আরও জোরে ধ্বনি তুলুন সবাই।’ এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তাঁর খোঁচা, ‘সবাই রামনাম উচ্চারণ করে গর্ববোধ করেন। কিন্তু মমতাজির তাতে আপত্তি। কারণ, উনি তোষণের রাজনীতি করেন। তবে ভোট শেষ হতে হতে আপনিও জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলবেন।’
এদিন কোচবিহারে পৌঁছে প্রথমে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিতে যান অমিত শাহ। তারপর সেখান থেকে রাসমেলা ময়দানের কাছে পঞ্চানন বর্মার মূর্তি মাল্যদান করে যোগ দেন জনসভায়। সভা থেকেই জয় শ্রী রাম স্লোগান ইস্যুতে তৃণমূলনেত্রীকে একের পর এক চাঁচাছোলা প্রশ্নে বিদ্ধ করলেন শাহ। চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন। কটাক্ষ করলেন। তোপ দাগলেন।
কোচবিহারে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মন পেতে এদিন আরও বড় ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজবংশী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তৈরি হবে পঞ্চানন বর্মার মূর্তি। তার জন্য ২৫০ কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, পঞ্চানন বর্মাকে সম্মান দিয়ে এর আগে কোচবিহার থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, এবার থেকে পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনে রাজ্য সরকার ছুটি দেবে। এবার ২৫০ কোটি টাকায় মূর্তি তৈরির ঘোষণা করে তারই পালটা দিলেন শাহ বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপরই তীব্র চিৎকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জয় শ্রী রাম এখানে বলবে না তো কি পাকিস্তানে বলবে? জয় শ্রী রাম–এ কেন অপমান লাগে আপনার? গোটা দেশ যেখানে জয় শ্রী রাম বলতে গর্ববোধ করে, সেখানে জয় শ্রী রাম শুনলে মমতা দিদির অস্বস্তিবোধ হয়। একটা বিশেষ সম্প্রদায়কে খুশি করতেই আপনার অপমান লাগে। তাই রাম নামে আপত্তি মমতা দিদির। তাঁদের তোষণ করে ভোট পেতে চান। কেন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষরা কি ভোটার নন?’
তীব্র সুরে তাঁর বক্তব্য, মোদী সরকার জনতার জন্য কাজ করে আর মমতা সরকার কাজ করে ‘ভাইপো’র জন্য। এদিন কোচবিহার থেকে ‘পরিবর্তন যাত্রা’ শুরুর আগে তার তাৎপর্য বোঝালেন অমিত শাহ। এরপর এখান থেকে তিনি সোজা চলে যাবেন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে, মতুয়াদের জনসভায়। সেখানে নাগরিকত্ব ইস্যুতে কী বার্তা দেন, সেদিকেই নজর সকলের। প্রসঙ্গত, নেতাজির ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখতে উঠলে জয় শ্রী রাম স্লোগান দেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতিতে এই স্লোগান ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। মঞ্চ থেকে নীরব প্রতিবাদে সরব হন মমতা।