নন্দীগ্রাম–সহ বাংলার ৬০ আসনে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম দফায় ৩০ আসনের মধ্যে অন্তত ২৬ আসনে বিজেপি জিতবে বলে আগেই দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর দ্বিতীয় দফার ভোট শেষ হওয়ার পর শুক্রবার উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে দাঁড়িয়ে শাহ দাবি করলেন, ‘প্রথম দুই দফার ভোটেই আমরা বাংলায় ৬০ আসনের মধ্যে ৫০ আসন পেয়ে গিয়েছি। বাংলায় আসল পরিবর্তন আসছেই। দিদির বিদায় নিশ্চিত।’ শুধু তাই নয়, ২ মে দুপর দুটোর পর বিদায় নেবেন মমতা। কালচিনির সভা থেকে এমনই দাবি করলেন শাহ।
শীতলকুচির সভায় অমিত শাহ বলেন, ‘নন্দীগ্রামে কাল কী হল দেখলেন তো? কী হয়েছে বলুন তো! মোট ৬০ আসনের মধ্যে ৫০–এর বেশি আসনে জিতছে বিজেপি। আপনার যাওয়ার সময়ে এসেছে দিদি। নন্দীগ্রামে আপনি হারবেন। উত্তরবঙ্গের একটা আসনও যেন দিদি কাছে না যায়। সব আসন মোদীর হাতে তুলে দিন। চিন্তা করবেন না, ২ মে দিদি যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গের আচ্ছে দিন আসছে।’ উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে বিপুল সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল শাসকদল তৃণমূল। এবার নবান্ন দখলের যুদ্ধেও উত্তরবঙ্গে একই সাফল্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর গেরুয়া শিবির।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কোচবিহার কলকাতা থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু দিদির কাছে তা ৭০০০ কিলোমিটার দূরে। এখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক যোগাযোগের কোনও সুবিধে নেই। এখানে তামাকের দাম যাতে বেশি মেলে তার জন্য কিছুই করেননি দিদি। শীতলকুচিতে রাস্তা তৈরির জন্য ২২ কোটি টাকা দিয়েছিল মোদী সরকার। সেই রাস্তা তৈরি হয়েছে? হয়নি। কারণ দিদি চান না রাজবংশী যুবকরা তাদের পত্নীদের মোটরবাইকে চাপিয়ে ওই রাস্তায় যাতায়াত করেন। চিন্তা করবেন না। ২ মে দিদি যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গের আচ্ছে দিন আসছে।
এদিন ফের তিনি তুলে এনেছেন অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘অনুপ্রবেশকারী নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তো আপনারা? কিন্তু মনে রাখবেন, দিদি এই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সমস্যা মিটবে না। কিন্তু বিজেপি সরকার এলে সব বন্ধ করে দেব।’ তাঁর প্রতিশ্রুতি, বিজেপি সরকার তৈরি হলেই উত্তরবঙ্গের বিকাশ হবে। আমরা সংকল্পপত্রে বলেছি, ক্ষমতায় এলেই উত্তরবঙ্গ বিকাশ বোর্ড গড়ব। প্রতিবছর ২০০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। নারায়ণী সেনা যারা উত্তরবঙ্গকে এতদিন রক্ষা করে চলেছে তাদের স্মরণে একটি ব্যাটালিয়ান বানাব। সেখানে থাকবেন রাজবংশী সমাজের মানুষজন। নারায়ণী সেনাকে আগামী একশো বছর দেশ যাতে না ভোলে তার ব্যবস্থা করব।
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিজেপি ক্ষমতায় এলেই কোচবিহারে এইমস বানানো হবে। গর্বের রাসমেলাকে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে। আমাদের সকলের প্রিয় ঠাকুর পঞ্চানন বর্মনের একটা বড় স্মারক বানানো হবে। তার জন্য খরচ করা হবে ২৫০ কোটি টাকা। উত্তরবঙ্গে অন্নদাতা ফুডপার্ক তৈরি করব। হর্টিকালচার গার্ডেন তৈরি করব। ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে কোচবিহারের রাস মেলাকে আন্তর্জাতিক স্তরে জনপ্রিয় করা হবে। রাজ্যে কেজি থেকে পিজি পর্যন্ত বিনা খরচে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে মহিলাদের জন্য। বিজেপি ক্ষমতায় এলে বিনা খরচে যাতায়াত করতে পারবেন মহিলারা।