দেশ ব্রেকিং নিউজ

প্রবল চাপে সিবিআই যোগীর

প্রবল চাপের মুখে পড়ে তদন্তভার শেষপর্যন্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিক্ষোভ, প্রতিবাদে প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে অবশেষে হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডের তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দিতে বাধ্য হলেন যোগী আদিত্যনাথ। শনিবার রাতে ঘটনার তদন্তভার সিবিআই–এর হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। যোগী আদিত্যনাথ নিজে টুইট করে এদিন রাত ৯টা নাগাদ সে কথা ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, হাথরসের দলিত তরুণীর ধর্ষণ মামলার তদন্তে বুধবারই তিনি তিন সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিলেন। তদন্ত শেষ করে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে সিটকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। শুক্রবার (২ অক্টোবর) প্রাথমিক একটি রিপোর্টও জমা দেয় সিট। তার ভিত্তিতে হাথরসের পুলিশ সুপার, ডেপুটি পুলিশ সুপার–সহ একাধিক পুলিশকর্তাকে তিনি সাসপেন্ড করেন। কিন্তু, হাথরস নিয়ে চারপাশ থেকে যে ভাবে চাপ আসছিল, তার জেরেই এই পদক্ষেপ।
এদিন টুইটে তিনি লেখেন, ‘‌হাথরাসের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা এবং তার সঙ্গে জড়িত সমস্ত ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্তের স্বার্থে, সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’‌ এদিন সকাল থেকেই একের পর নাটকীয় পট পরিবর্তন হতে থাকে। প্রায় দু’‌দিন ধরে ব্যারিকেড করে আটকে রাখার পর এদিন সকালে হাথরাসে নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের। সেখানে গিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন সাংবাদিকরা। তাঁদের কাছে গোটা ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ–প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেয় নির্যাতিতার পরিবার।

তার পরেই স্নায়ুর চাপ বাড়তে শুরু করে যোগী আদিত্যনাথের। তখন তাঁর নির্দেশে হাথরাসে গিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন উত্তরপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব অবনীশ কুমার অবস্থি এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি এইচসি অবস্থি। মাটিতে বসে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পরে স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, ঘটনার তদন্তে গঠিত সিট ইতিমধ্যেই নিজেদের কাজ শুরু করেছে। তাদের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই সাসপেন্ড করা হয়েছে হাথরাসের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে। ঘটনার তদন্ত চলবে বলেও তিনি জানান।

গত মঙ্গলবার নির্যাতিতা তরুণীর মৃত্যুর পর পুলিশ রাতের অন্ধকারে যেভাবে তড়িঘড়ি মৃতদেহ পুড়িয়ে দেয়, তাতে সন্দেহ আরও জোরদার হয়। তরুণীর সত্‍‌কারে পরিবারের অনুমতি নেওয়া তো দূর অস্ত, তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যকে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। সারারাত তাঁদের ঘরবন্দি করে রাখা হয়। পুলিশ আটকে দেয় রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং কংগ্রেসের ৩৫ জন সাংসদকে। তাঁদের হাথরাসে যেতে দেওয়া হবে না বলে সেখানে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশকর্মীকে। পরে রাহুল–প্রিয়াঙ্কা–সহ কংগ্রেসের পাঁচ জনের প্রতিনিধিদলকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ হাথরাস পৌঁছন রাহুল–প্রিয়াঙ্কা। তাঁরা কথা বলেন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে। এরপরেই জানা যায় ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যোগী। তবে এই সিবিআই বাবরি মসজিদ মামলায় যা করেছে তাতে এই তদন্তে মানুষের কতটা বিশ্বাস থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সিবিআইকে দিয়ে নিজের চাপ মুক্ত করে পরে ম্যানেজ করে নেওয়া হবে না তো?‌