আজ, রবিবার থেকেই হলুদ সতর্কতা জারি হচ্ছে দীঘা উপকূলে। শনিবার সকাল থেকেই জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূল এলাকার পাশাপাশি হলদিয়া, সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম, মহিষাদল–সহ বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হয়। দু’টি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। প্রথমটির অভিমুখ ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলের দিকে হলেও তার প্রভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের ২৬ ও ২৭ তারিখ প্রচুর বৃষ্টি হবে। তাই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অপর ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে উপকূল এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে। সেজন্য ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে।
ভারী বৃষ্টি এবং কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর সাত-আটটি ব্লক প্লাবিত। ১০ লক্ষের বেশি মানুষ জলবন্দি। ৪২১টি ত্রাণশিবিরে ৬৫ হাজার বাসিন্দা আছেন। কয়েক হাজার মানুষ ত্রিপল খাঁটিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। এই অবস্থায় ভারী বৃষ্টি এবং ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসে ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবির এবং উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার দুর্গত মানুষের চিন্তার শেষ নেই। তাঁদের সামনে এখন নতুন বিপদ। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত টানা চারদিন পর্যটকদের সমুদ্রে নামার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ওল্ড দীঘা এবং নিউ দীঘা পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার এগজিকিউটিভ অফিসার মানস মণ্ডল এবং রামনগর-১ বিডিও বিষ্ণু রায়। দীঘা মোহনায় গিয়ে তিনি সমুদ্রে যাওয়া মৎস্যজীবীদের শনিবারের মধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেন। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টারে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর আগে যশ সাইক্লোনের সময় চার লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছিল। এবারও উপকূল এলাকা থেকে মানুষকে সরানো হবে। পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। কারণ, বহু মৌজায় ঘরবাড়ি, অফিস, ব্যাঙ্ক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র সবই জলের তলায়। মানুষের মাথা গোঁজার আশ্রয় নেই। তাঁদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়াটাই জেলা প্রশাসনের কাছে কঠিন পরীক্ষা।