বাংলা থেকে আল–কায়দা জঙ্গিদের যে ধরা হয়েছিল তাদের জেরা করে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত ৬ জঙ্গির ফোন ঘেঁটে তদন্তকারীদের হাতে এল ২২ সদস্যের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের পুরো কথোপকথনই ছিল ডিলিটেড ফর্ম্যাটে। মুছে দেওয়া হয়েছিল পুরো কথোপকথনই। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আইটি সেল সেই মুছে দেওয়া ডেটা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নাম কিতল ফর ইসলাম। কিতল একটি আরবি শব্দ। যার মানে যুদ্ধ। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নামটির বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ইসলামের জন্য যুদ্ধ। মুর্শিদাবাদকে এপিসেন্টার করে এই রাজ্যে আল–কায়দা জঙ্গি জাল বিস্তারের পরিকল্পনা করেছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে এনআইএ।
এনআইএ সূত্রে খবর, ভারতে বড় নাশকতার ছক কষেছিল আল–কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখা। যার নাম আল–কায়দা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট। আল–কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখার লক্ষ্য—পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, মায়ানমার এবং বাংলাদেশ মিলে বৃহৎ ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন।
তবে এই কাজে শুধু ডার্ক ওয়েব নয়, তার থেকে আরও হাইটেক প্রযুক্তির ডিপ ওয়েবের ব্যবহার করত জঙ্গিরা। তদন্তকারীদের হাতে এসেছে এক জঙ্গির ফোন কলের রেকর্ডিং। তদন্তকারীরা মনে করছেন, কথোপকথনটা হয়েছিল অন্য আর এক সদস্যের সঙ্গে। সে পশ্চিমবঙ্গেরই বাসিন্দা। তার খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
আজ রাতে বিএসএফের ৩টি বিশেষ বিমানে করে ধৃত ৬ জঙ্গিকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেরল থেকে ধৃত ৩ জনকেও নিয়ে আসা হচ্ছে দিল্লিতে। দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে ধৃত জঙ্গিদের আর এক দফা জেরা করবে রাজ্যের এসটিএফ।
সূত্রের খবর, ডিপ ওয়েবের মাধ্যমে তথ্য লেনদেন করত জঙ্গিরা। ভিডিও’য় কথাবার্তা থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ে টাকা পাঠানো, সবই হতো ডিপ ওয়েবের মাধ্যমে। কিছু ওয়েবসাইট বায়োলজিক্যাল স্ক্যানের মাধ্যমে সুরক্ষিত রয়েছে। ধৃতদের ফিঙ্গার প্রিন্টেও খুলছে সে সব ওয়েবসাইট। তদন্তকারীদের অনুমান, অন্য কারোর ফিঙ্গার প্রিন্টে সুরক্ষিত সেগুলি।
ইন্টারনেটে দু’ধরনের প্ল্যাটফর্মে তথ্য আদানপ্রদান হয়ে থাকে। সারফেস ওয়েব এবং ডিপ ওয়েব। যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ প্ল্যাটফর্মে শনাক্ত করা যায় না, তাই ডিপ ওয়েবের অন্তর্গত।ডার্ক ওয়েব হল— ডিপ ওয়েবের অন্তর্গত একটি জটিল স্তর। যার নির্দিষ্টভাবে ইন্টারনেট প্রোটকল অ্যাড্রেস চিহ্নিত করা যায় না। একাধিক ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের ব্যবহার হয়। তাই তার ট্র্যাক করা অত্যন্ত কঠিন।