বিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। যারাও আছেন অনেকে নিয়মিত আসেন না। ক্লাস নিচ্ছেন মিড ডে মিলের রাঁধুনি। এদিকে শ্রেণীকক্ষের ছাদে ফাটল থাকায় আতঙ্কে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। ঘটনা মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হরিশ্চন্দ্রপুর সদরে ভজমোহন নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। যেখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকার ফলে রাঁধুনি ক্লাস নিচ্ছেন, সাফাই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের।
তৃণমূলের আমলে ধ্বংস হয়ে গেছে শিক্ষা-ব্যবস্থা, তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। খতিয়ে দেখে প্রয়োজন মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পাল্টা বক্তব্য তৃণমূলের। যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
জানা গেছে, মোট চারজন শিক্ষক রয়েছেন এই বিদ্যালয়ে। তার মধ্যে একজন রয়েছেন ছুটিতে। আরেক পার্শ্ব শিক্ষক পলাশ দাস নিয়মিত ভাবে বিদ্যালয় আসেন না। তাই ছাত্রদের পড়াতে দেখা গেল মিড ডে মিলের রাঁধুনি সান্ত্বনা দাসকে। এদিন ফাটল দেখা দিয়েছে শ্রেণীকক্ষের ছাদে। যার ফলে আতঙ্কে ক্লাস করছে ক্ষুদে পড়ুয়ারা।
বিদ্যালয় সূত্রের খবর, পার্শ্ব শিক্ষক পলাশ দাস বহুদিন ধরে নিয়মিত আসেন না। এই নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের প্রশাসনিক কর্তা এবং পার্শ্ব শিক্ষক সংগঠনের পদাকাধিকারীদেরকেও জানিয়েছে বিদ্যালয়। এমনিতেই ছাত্র সংখ্যা অনুযায়ী নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন ছুটিতে রয়েছেন। ফলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং অন্য এক জন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে সম্পূর্ণ ক্লাস নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সেই জন্যই বাচ্চাদের দেখা শোনার জন্য বলেছেন মিড ডে মিলের রাঁধুনিকে। দরকার পড়লে বাচ্চাদের ক্লাসও নিচ্ছেন তিনি। এই কথা স্বীকার করে নিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এই নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের মত শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিচ্ছে তৃণমূল। ফলে নষ্ট হচ্ছে পড়ুয়াদের জীবন। যদিও তৃণমূলের দাবি সম্পূর্ণ ব্যাপার খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজন হলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার দাস বলেন, “মাত্র চার জন শিক্ষক রয়েছে। একজন ছুটিতে। পার্শ্ব শিক্ষক নিয়মিত ভাবে আসেন না। মিড ডে মিলের রাঁধুনিদের তিনি নেত্রী। তাকে বলেছি, বাচ্চাদের দেখতে। কখনো হয়তো ক্লাস নিচ্ছে। ফাটলের ব্যাপারটা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানাবো।”
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষাণ কেডিয়া বলেন, “শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করতে পারছে না। চারিদিকে বিদ্যালয় গুলোতে এরকম বেহাল অবস্থা। সংবাদমাধ্যম থাকার ফলে এগুলো সামনে আসছে। তৃণমূল শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছে। বিজেপি যতদিন না আসে এই রাজ্যে কিছু ঠিক হবে না।”