ব্রেকিং নিউজ রাজ্য

অধীরেই আস্থা রাখলেন সোনিয়া

সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হচ্ছিল। এখানকার অনেক নেতা দিল্লিতে নিজের জন্য দরবার করেছেন বলে সূত্রের খবর। আবার অনেকে অধীররঞ্জন চৌধুরীর হয়ে ব্যাট করেছেন। অবশেষে প্রায় মাস দেড়েকের টালবাহানার পর বুধবার মধ্যরাতে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীকেই প্রদেশ সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেছে এআইসিসি।
এখন প্রশ্ন উঠছে ফের অধীর চৌধুরী কেন?‌ কংগ্রেস সূত্রে খবর, অধীররঞ্জন চৌধুরীর প্রদেশের মধ্যে একটা একক ক্যারিশ্মা আছে। তাছাড়া বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। অধীরকে প্রদেশ সভাপতি করলেই যে একটা বিরাট সাফল্য আসবে তা না। তবে এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে সোনিয়ার বার্তা বাম–কংগ্রেস জোটই বজায় থাকবে। যতই মমতা–সোনিয়া কাছাকাছি আসুক, আসলে বাম–কংগ্রেস জোটের পক্ষেই রায় দিল এআইসিসি। প্রণব, সোমেনের দেখানো পথেই হাঁটতে হবে অধীরকে। আর তিনি এই পথের যোগ্য পথিক বলেই মনে করে ফের তাঁকে পুরনো আসন ফিরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে আকস্মিক ভাবে তাঁকে সরিয়েই সোমেন মিত্রকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কুর্সিতে বসিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সোমেনের প্রয়াণের প্রায় এক মাস পর ফের সেই অধীর চৌধুরীকেই বিধান ভবনের মাথায় বসালেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
দলীয় সূত্রে খবর, দলের প্রবীণ নেতা আব্দুল মান্নান সোনিয়াকে চিঠি দিয়ে অধীরবাবুকেই সভাপতি–পদে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আর্জি জানান। গত ৩০ জুলাই আকস্মিক সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পর নেতৃত্ব সংকটে পড়ে প্রদেশ কংগ্রেস। তারপর প্রথমে সম্ভাব্য নতুন সভাপতি হিসেবে অধীর, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং মান্নানের নাম শোনা গিয়েছিল। তারপর আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, নেপাল মাহাতো, শঙ্কর মালাকার এবং মনোজ চক্রবর্তীর নাম উঠে আসে। কিন্তু মান্নানের চিঠি এখানে কাজ করেছে বলেই সবাই মনে করছেন।
বাংলায় এই মুহূর্তে কংগ্রেসের সব থেকে দাপুটে মুখ বহরমপুরের এই সাংসদ। লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে কংগ্রেসের ভরাডুবিতেও নিজের গড় ধরে রাখতে সফল তিনি। যার ফলস্বরূপ জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ তাঁর উত্থান হয়েছে। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা পদে এই বাঙালি রাজনীতিককে বেছে নিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রধানের পদেও তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে গান্ধী পরিবার। পশ্চিমবঙ্গে ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ বলেন, ‘‌আসলে অধীরবাবু ছাড়া বিকল্প নেই। খুব সঙ্কটজনক সময়ে অধীরবাবু দায়িত্ব নিচ্ছেন। রাজ্য কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতাই সব থেকে বেশি।’‌ এখন দেখার তিনি বঙ্গ কংগ্রেসের মরা গাঙ্গে বান আনতে পারেন কিনা।