খাদিকুলের পর এবার বজবজের বেআইনি বাজি কারখানার গোডাউনে বিধ্বংসী আগুন। জানা গিয়েছে, বজবজ চিংড়িপোতা নন্দরামপুর দাসপাড়ায় অবস্থিত একটি বাড়িতে চলত ওই কারখানা। রবিবার রাত আটটা নাগাদ গোটা বাড়ি আচমকাই কেঁপে ওঠে। বিকট শব্দে ভয় পেয়ে যান এলাকাবাসীরা। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মহিলা, একজন নাবালিকা ও একজন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে,এই ঘটনার পর থেকেই থমথমে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রাম। তুবড়ি, চকলেট, চরকা, রকেট, সেল, তারাবাতি, রংমশাল সহ প্রচুর মশলা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামের মহিলাদের দাবি,‘ স্থানীয় পুলিশ সবকিছুই জানি। ওই গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতেই বাজি তৈরি হয় এবং অধিকাংশ জনেরই লাইসেন্স নেই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। স্থানীয় সূত্রের খবর, যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার উপরের তলায় কাজ হচ্ছিল। বেআইনি ভাবে বাজি মজুতও ছিল সেখানে। হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পাশের পুকুর থেকে জল তুলে তুলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন প্রতিবেশীরা। পরে দমকল পৌঁছলেও সরু গলিতে ঢুকতে সমস্যা হয়। বাড়িটিতে দীর্ঘদিন ধরে বাজি তৈরির কাজ চলত বলেই স্থানীয়দের দাবি। অভিযোগ, ঘরে ঘরে কুটিরশিল্পের মতো বহু মানুষ সপরিবার বাজি বানান বেআইনি ভাবে এবং বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রশাসন এ সবকিছুই জানে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ওই বাড়িটিতেও বাজি তৈরির কাজ চলছিল।
ইতিমধ্যেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আতসবাজির চিহ্ন মিলেছে। ঘটনার পর থেকেই রাতভর অতি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে পুলিশ। গোটা গ্রামজুড়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর বাজি ও বাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের অ্যাডিশনাল এসপি অর্ক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাজি বাজেয়াপ্ত করার অভিযান চলছে। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।