রাজনৈতিক নেতা নয় এবার সরকারের কোটি কোটি টাকা তছরূপ করার অভিযোগ এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের পক্ষ থেকে সিল করে দেওয়া হল ওই ব্যবসায়ীর রাইস মিল। সরকারের ন্যায্য মূল্যের ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে কোটি কোটি টাকার ধান কিনে সরকারকে চাল দিচ্ছে না রাইস মিল। রাইস মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কেন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হচ্ছে না উঠছে প্রশ্ন? সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এর পেছনে রয়েছে শাসকদলের নেতাদের হাত। দাবি বিরোধীদের। যারা যুক্ত থাকবে রাজনীতি না দেখে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে সাফাই তৃণমূলের। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বার্তা জেলাশাসকের।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা এলাকার কুস্তুরিয়া গ্রামে বাকে বিহারী এগ্রোটেক প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেড রাইস মিল। এই রাইস মিল চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের হাজতপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের কুশিদা ন্যায্য মূল্যের সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ধান কেনার বরাত পায় সরকারের কাছ থেকে। বদলে তাদের চাল দেওয়ার কথা সরকারকে। এই দুইটি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে ১৩ হাজার কুইন্টাল যার বাজার মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকার ধান নেয় এই রাইস মিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তারা সরকারকে চাল দিচ্ছিল না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল এই টালবাহানা। অবশেষে খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিকরা এসে সিল করে দিল এই রাইস মিল।
রাইস মিলের মালিকানায় যৌথ ভাবে রয়েছেন তিনজন। শীতল মোদি, সংগীতা আগারওয়াল, কিরণ দেবী আগারওয়াল। সূত্রের খবর, সংগীতা আগরওয়াল এবং কিরণদেবি আগারওয়াল মালিকানা হস্তান্তর করে দিয়েছেন শীতল মোদির কাছে। কিন্তু কাগজপত্রের সমস্ত কাজ সম্পন্ন না হওয়াই তারা পুরোপুরি ভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাননি। এদিকে শীতল মোদীর পরিবারের লোক বিজয় মোদি ওরফে (বাবলু) স্বাক্ষর এবং কাগজপত্র জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন ধরেই মিলের কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের কাছে বর্তমানে অভিযুক্ত চারজনেই।
প্রশ্ন উঠছে, সংগীতা আগরওয়াল এবং কিরণ দেবী আগরওয়াল জালিয়াতির কথা জানার পরেও কেন মালিকানা হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন। সরকারের কাছ থেকে এই রাইস মিল ১৩ হাজার কুইন্টাল ধান ক্রয় করে। তবে এতদিন ধরে বেনিয়ম চলার পরেও প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে এত দেরি করল কেন সেই নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।
বিজেপি এবং সিপিআইএমের দাবি, এই কোটি কোটি টাকা তছরূপের পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে। মদত রয়েছে প্রশাসনের একাংশের। না তো দীর্ঘদিন ধরে তারা কি ভাবে এই দুর্নীতি চালিয়ে যেতে পারলো। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে বিরোধীরা। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যদি শাসলদলের কেউ যুক্ত থাকে সে ছাড় পাবে না। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।