শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা মায়ের জন্য দরকার ওষুধ। সেই ওষুধ কিনতে কয়েক কিলোমিটার দূরে যেতে হবে। তার চেয়ে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে ঢুকে দ্রুত ওষুধ নিয়ে আসতে সময় লাগবে কম। সে কথা মাথায় রেখে সঙ্কটাপন্ন মায়ের জীবন বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে সীমান্তের নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে এদেশে আসেন বাংলাদেশি এক যুবক। ওষুধও কিনেছিলেন।
কিন্তু চোরাপথে সীমান্ত পেরতে গিয়েই ভারতীয় জওয়ানদের হাতে ধরা পড়েন ওই বাংলাদেশি যুবক মিঠুন মণ্ডল। মায়ের অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। সবকিছু শোনার পর বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের জওয়ানদের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করে মানবিকতার খাতিরে ওই যুবককে ওষুধ সহ ফিরিয়ে দিল বিএসএফ।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় সিং গুলেরিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ আটকাতে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। সীমান্তের অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের ধরা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অসুস্থ মায়ের জীবন বাঁচাতে ওই যুবক অবৈধভাবে এদেশে এসেছিলেন ঠিকই। কিন্তু তাঁকে আমরা আটকে রাখিনি।’
যুবককে বাংলাদেশে ফেরানো হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই যুবক চাপড়া এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ ফেরার চেষ্টা করছিল। তখন তাঁকে ধরে ফেলে বিএসএফ জওয়ানরা। ওই যুবকের বাড়ি বাংলাদেশের চুয়াডাঙা মাজপাড়া এলাকায়। কয়েক বছর আগে তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। জওয়ানদের জেরার মুখে যুবক বলেন, ‘মা হার্টের রোগী। হাঁপানির সমস্যা রয়েছে। মাকে সুস্থ করে তুলতে এই ওষুধ প্রয়োজন। তাই চোরাপথে এদেশে এসেছিলাম। এরপরই যুবকের কোনও ‘ক্রাইম হিস্ট্রি’ বা অপরাধের ইতিহাস আছে কি না তা জানার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যুবককে তাঁরা ‘ক্লিনচিট’ দেন। এরপরই বুধবার যুবককে নিজের দেশে ফেরানো হয়েছে।’ যাওয়ার আগে আবেগ তাড়িত মিঠুন বলেন, ‘ভারতীয় জওয়ানদের এই সহযোগিতা সারাজীবন মনে রাখব।’