সমুদ্রে বোতলের ভিতরে কোনও চিঠি বা সাংকেতিক বার্তা লিখে ভাসিয়ে দেওয়ার রীতি দীর্ঘদিনের। একটা সময় যখন টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলই না তখন এই ভাবেই কাঁচের বোতলের ভিতর বার্তা লিখে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিতেন বিপদে পড়া নাবিকরা। তাঁদের একমাত্র আশা ওই বোতলে থাকা বার্তা বা চিঠি পেয়ে যদি কোনও জাহাজ উদ্ধার করতে আসে। সেরকমই জাপানের একদল ছাত্র একটি বিশেষ বার্তা লিখে তা একটি বোতলে পুরে ছিপি আটকে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। একটি দুটি নয়, মোট সাড়ে সাতশো বোতল সমুদ্রে ভাসানো হয়েছিল। তাও আবার ১৯৮৪-85 সালের মধ্যে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সমুদ্রের ঢেউয়ের গতি ও প্রবাহ নির্ধারণ করার।
অবশেষে ওই বোতলগুলির মধ্যে একটি উদ্ধার হল জাপান থেকে ৬,০০০ কিমি দূরে হাওয়াই দ্বীপে। আর আশ্চর্যের বিষয় ওই বোতলটি সমুদ্রে ভেসে হাওয়াই দ্বীপে আসতে সময় নিল ৩৭ বছর!
জানা গিয়েছে, জাপানের পূর্ব টোকিও-র চিবা এলাকার চোসি হাই স্কুলের একদল ছাত্র এরকম চিঠি লেখা ৭৫০টি বোতল সমুদ্রে ভাসিয়েছিল ১৯৮৪-৮৫ সালের মধ্যে। ওই সমস্ত বোতলের ভিতর জাপানি, পর্তুগিজ এবং ইংরেজি ভাষায় লেখা চিঠিতে মূলত লেখা ছিল যদি এই বোতলের ভিতর বার্তা কেউ পেয়ে থাকেন তবে তাঁরা প্রেরকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
এই বতলগুলির মধ্যে একটি সম্প্রতি পাওয়া গেল হাওয়াই দ্বীপের সমুদ্র সৈকতে। পেল ৯ বছরের এক বালিকা। যেটি প্রায় ৩৭ বছর ধরে সমুদ্রে ভেসে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে হাওয়াই দ্বীপে এসে পড়েছে। আর আশ্চর্যের বিষয়, বোতলের ভিতর রাখা চিঠিটি একদম অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। লেখাও ঠিকঠাক ছিল।
জানা যাচ্ছে, প্রথম দিকে ৫০টির মতো বোতল উদ্ধার হয়েছিল জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কাগোসিমা এলাকার সমুদ্র সৈকতে। আর ২০২১ সালের জুন মাসে ৫১তম বোতলটি এবার উদ্ধার হল এই হাওয়াই দ্বীপে।
ওই বোতলগুলি সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার ৩৭ বছর পর ৬০০০ কিমি দূরে উদ্ধার হল ৫১তম বোতলটি। এর আগে ১৯ বছর আগে পাওয়া গিয়েছিল ৫০তম বোতলটি। জাপানের ওই স্কুলের কর্তৃপক্ষ দারুণ খুশি ৫১ নম্বর বোতলটির খোঁজ পাওয়ায়। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছে, আশা করছি আরও বোতল পাওয়া যাবে কোনও না কোনও দেশে।