সুদীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান। শেষমেশ প্রায় আট বছর পর আদালতের নির্দেশে স্কুল শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে চলেছেন সুরজিৎ গোস্বামী। তাঁকে প্রাপ্য চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। শুধু নিয়োগপত্রই নয়, ২০১৪ সাল থেকে প্রাপ্য সমস্ত ধরনের সুযোগ সুবিধা যাতে তিনি পান সেই নির্দেশও বিচারপতি দিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যখন তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি, ঠিক সেসময়ই জয়ের হাসি হাসল সুরজিৎ।
বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ গোস্বামী। শারীরশিক্ষা বিষয়ে বিপিএড করার পর থেকেই স্কুল শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। সেই স্বপ্ন নিয়েই ২০১১ সালে প্রকাশিত স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার জন্য আবেদন জানান। পরীক্ষা ভাল হওয়ায় সুরজিৎ গোস্বামী ভেবেছিলেন এবার স্বপ্ন পূরণ হবে। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় তিনি উর্ত্তীর্ণ হতে পারেননি। বিষয়টি সুরজিৎ মেনে নিতে না পারায় পরীক্ষার খাতার আরটিআই করেন সে।
এরপর সুবিচারের দাবিতে ২০১৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুরজিৎ। দীর্ঘ শুনানির পর ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, সুরজিতের ২ নম্বর বেড়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে গোটা বিষয়টি ৪২ দিনের মধ্যে খতিয়ে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অতঃপর ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ইন্টারভিউ হয় তাঁর। ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে কোয়ালিফায়েড হলেও সেসময় নিয়োগপত্র হাতে পাননি সুরজিৎ। তখন ফের হাইকোর্টে মামলা করেন সুরজিৎ। অবশেষে বিচারক রাজশেখর মান্থা মঙ্গলবার স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সুরজিৎকে নিয়োগ করতে হবে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় কমিয়ে দেওয়া ২ নম্বর আদায় করতে সুরজিৎকে দীর্ঘ আট বছর আদালতে লড়াই করতে হয়েছে।
বরাবরই এলাকায় ভালো ও মেধাবী ছেলে হিসেবেই পরিচিত সুরজিৎ গোস্বামী। সরকারী চাকরি না পেয়ে বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ আট বছর পর আইনি লড়াই শেষে সুরজিৎ চাকরি পেতে চলায় খুশি তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে গ্রামবাসীরা।