আন্তর্জাতিক

মহিলাদের বিবস্ত্র করে তল্লাশি বিমানবন্দরে

দোহা থেকে সিডনিগামী একটি বিমানের মহিলা যাত্রীদের পোশাক খুলিয়ে তল্লাশির ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে কাতার। অস্ট্রেলিয়াগামী ১৮ জন মহিলাকে বিমান থেকে নামিয়ে দোহা বিমানবন্দরে নগ্ন করে তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে। শেষপর্যন্ত চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হল কাতার প্রশাসন। টার্মিনালের টয়লেট থেকে একটি নবজাতককে উদ্ধারের পরই এই ঘটনাটি ঘটেছে। নবজাতকের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের আগে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে কাতারের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল? প্রত্যক্ষদর্শীরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিমান থেকে নামানোর পরই ওই মহিলারা কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে উঠেছিলেন। তখনই অস্ট্রেলিয়ার ১৩ জন মহিলাকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় এবং পরীক্ষা করার আগে তাদের অন্তর্বাস খুলতে বলা হয়। সদ্যোজাতর মাকে খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে বিদেশি মহিলাদের বিমান থেকে জোর করে নামিয়ে নগ্ন করে তল্লাশি করা হয়। এমনকী, মহিলাদের গোপানাঙ্গেও তল্লাশি চালানো হয়। তাঁরা সদ্য মা হয়েছেন কি না তা দেখতেই এই কাজ করা হয়েছে বলে খবর।
অস্ট্রেলিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, ওই মহিলাদের সঙ্গে যে ধরণের ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে মুক্তভাবে মতপ্রকাশ করার মতো পরিবেশ ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিদেশ মন্ত্রী মেরিস পেইন বলেন, ‘‌ওই মহিলাদের কেন যৌন নিগ্রহ করা হল তা আমরা বলছি না। তবে ঘটনাটি চরম বিরক্তিকর, আপত্তিকর এবং উদ্বেগজনক।’‌ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সিডনিগামী ১০টি বিমান থেকে মোট ১৮ জনকে মহিলাকে নামানো হয়। যাঁদের মধ্যে ১৩ জন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দার। এরপরই কাতারকে কড়া বার্তা দেয় অস্ট্রেলিয়া। যার জেরে শেষপর্যন্ত বুধবার ক্ষমা চাইতে বাধ্য হল কাতার।
হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক মুখপাত্র জানান, কাতারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সদ্য সন্তান জন্ম দেওয়া এক মায়ের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগে ছিলেন এবং বিমানবন্দর ছাড়ার আগে তাঁকে খুঁজে বের করার অনুরোধ করেছিলেন। বিমানবন্দরের যে জায়গায় ওই নবজাতককে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে যাদের প্রবেশাধিকার ছিল তাদের প্রত্যেককেই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছিল। আর কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীকে ধরতেই সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর ফলে কোনও যাত্রীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বিঘ্নিত হলে কাতার প্রশাসন তার জন্য দুঃখিত।