হাইভোল্টেজ বৈঠক। স্থান রাজভবন। বাইরে তখন প্রবল বিক্ষোভ। ভেতরে যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী–বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরুতেই রাজ্যের বকেয়া পাওনা ২৮ হাজার কোটি টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এবং বুলবুলের জেরে হওয়া ক্ষতি সাত হাজার কোটি টাকা সব নিয়ে মোট পাওনা ৩৮ হাজার কোটি টাকা দ্রুত রাজ্যকে দেওযার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নাগরিকপঞ্জি ও নাগরকিত্ব সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন মমতা। পরে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, দেশের নাগরিক সকলে। তাই নাগরিকত্ব এইভাবে কাড়া যায় না। তিনি আবেদন করেছেন অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার যেন সিএএ এবং এনআরসি প্রত্যাহার করে তাঁর দাবিও এদিন জানিয়েছেন। যার পরই এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান দিল্লিতে আসুন এই বিষয়ে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে এসেছেন তাই তাঁর সঙ্গে সৌজন্যের কারণে সাক্ষাত্ করেছি। এরপরই সেখান থেকে সরাসরি ধর্না মঞ্চে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী।
মিনিট ১৫ বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘বৈঠকে বলেছি আপনি আমার অতিথি। এটা মনে হয়েছে বলে বলছি। এনআরপি, ক্যা এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে। কোনও মানুষই যেন দেশ থেকে বাদ না যায়। কোনওরকম অত্যাচার না হয়। মানুষে মানুষে বৈষম্য না হয় এটা আপনাকে দেখতে হবে।’ শুক্রবার দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করার নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এদিন বৈঠকে ওই আইন প্রত্যাহারের অনুরোধ করে মমতা বলেন, ‘ক্যা ও এনআরসি নিয়ে আরও একবার ভাবনাচিন্তা করুন। প্রত্যাহার করুন।’ মোদীর কাছে এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে তারই জবাব দিলেন মমতা। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর সামনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পিছপা নন।