স্বাধীনতার ৭০ বছর পর ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেনাবাহিনীতে দূর হল লিঙ্গ বৈষম্য। সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারদের পুরুষ অফিসারদের মতোই কমান্ডিং বা নেতৃত্বের ভূমিকা দিতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার এই ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং অজয় রাস্তোগির বেঞ্চ। দিল্লি হাইকোর্টের ২০১০ সালের রায়কেই বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই রায় কার্যকর করতে হবে। এই রায়ের ফলে এক মহিলা অফিসার কর্নেল পদ পেতে পারেন তাঁর পুরুষ সহকর্মীর মতো বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারকেও তার মানসিকতা বদল করার কথা বলল আদালত। এককথায় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী পদে নিয়োগ নিয়ে শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল কেন্দ্র। তবে কমব্যাট ফোর্সের ক্ষেত্রে এই রায় প্রযোজ্য নয়। কেন্দ্র হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। কেন্দ্রের ভূমিকাকেও ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, গতানুগতিক প্রথা ভেঙে বেরতে হবে। রায় পড়ার সময় বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘সেনাদের নিজের ভূমিকা পালনে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন। সেনায় মহিলারা যুগান্তকারী কাজ করছেন। মহিলা অফিসাররা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরুষ অফিসারদের সঙ্গে কাজ করছেন। শারীরিক দায়বদ্ধতা এবং সামাজিক নিয়মনীতির কথা বলে মহিলা অফিসারদের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা কেন্দ্রের মানসিকতা মেনে নেওয়া যায় না।’
দিল্লি হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, মহিলাদের সেনাবাহিনীতে স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় কেন্দ্র। কেন্দ্রের ওই মনোভাবকে লিঙ্গ স্টিরিওটাইপ বলে বর্ণনা করেছে শীর্ষ আদালত। এই ধরনের মনোভাব মহিলাদের অপমান। যেসব মহিলা অফিসার স্থায়ী পদের জন্য আবেদন করেছেন তাদের আগামী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে সব শর্ত হবে পুরুষদের মতোই। সুপ্রিম কোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ে খুশির হাওয়া সেনাবাহিনীর মহিলা অফিসারদের মধ্যে।