লাইফস্টাইল

সন্তানের স্কুল ছুটিতে

তুতুলের স্কুলেপ্রায় গরমের ছুটি চলছে। পড়াশোনার চাপও অপেক্ষাকৃত কম। বাবা-মা সকাল হলেই বেরিয়েপড়েন অফিসে, ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা। খেলার নেই কোনও বন্ধু, টিভির কার্টুন দেখতেও আরইচ্ছা হয় না। সময় যেন কাটতেই চায় না তুতুলের। 

একটানা এতদিনেরছুটিতে শিশুদের মজা বা স্বাধীনতা কি খুব একটা আছে? ছোট্ট ফ্লাটে বন্দি থাকা, বাইরেরোদে ঘোরা বারণ, স্কুল থেকে দেওয়া হোমওয়ার্ক শেষ করার তাড়া – সব মিলিয়ে ছুটির মজাতেমন একটা পাওয়া হয় না এখনকার শিশুদের। টিভিতে একটানা কার্টুন চ্যানেল চলছে তোচলছেই। ঘরে শিশুদের দুরন্তপনায়ও অতিষ্ট সবাই।

বাবা-মায়েরাও ছুটিরসময় অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বসেন।

আসলে লম্বাছুটিতে ঘরবন্দি থেকে শিশুরা তিতিবিরক্ত। আবার তাদের দৌরাত্ম্যে বাবা-মা ক্লান্ত। ছুটিরদিনগুলোতে কীভাবে ছোটদের ব্যস্ত এবং আনন্দে রাখা যায়, তা নিয়ে রয়েছে কিছু পরামর্শ।

১। একটাপ্রজন্ম পিছিয়ে গেলেই গরমের ছুটির সংজ্ঞাটা কেমন যেন বদলে যায়। মনে করে দেখুন,আপনার ছেলেবেলায় এমন ছুটি মানেই ছিল মামাবাড়ি বা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কাজিনদেরসঙ্গে মিলেমিশে দারুণ মজা করা। আপনার সন্তানকেও এমন আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবেন না।সারাবছর হয়তো কাজের চাপে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠে না। এই সময়েসেই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিন। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মেশার, খেলা করার সুযোগ করে দিন।

২। লম্বা ছুটিপেলেই কোনও দূরের জায়গায় বেড়াতে যেতে হবে এমন কোনও মানে নেই। যেতে পারেন কাছাকাছিকোথাও, যেখানে ছেলেমেয়েরা মনের আনন্দে সময় কাটাতে পারে।

৩।পড়াশোনারবাইরে আপনার সন্তানের অন্য যেসব বিষয়ে উৎসাহ রয়েছে, তা জানার সুযোগ এখনই। সেই শখেরবিষয়ের উপর নানান বই কিনে দিতে পারেন। দুজনে বসে ইন্টারনেট ঘেটে এই বিষয়ের নানাতথ্য সংগ্রহ করুন। খোঁজ নিয়ে দেখুন এই ছুটির মধ্যে কোনও ট্রেনিং ক্লাশ চলছে কি না।তাহলে সেখানে ওকে ভর্তি করে দিতে পারেন। নিজস্ব চিন্তাভাবনার শরিক পেলে আপনারসন্তান তার শখের কাজে অনেক উৎসাহ পাবে।

৪। ছেলেমেয়েকেসঙ্গে নিয়ে তাদের ঘর, বারান্দা বা ছাদ বাগান কিংবা ঘরের যে কোনও অংশ নতুন করেসাজানোর পরিকল্পনা করুন। প্রথমে এই ব্যাপারে ওদের মতামত নিন। তারপর দায়িত্ব ভাগকরে দিন। রঙিন কাগজ দিয়ে কোলাজ বানিয়ে একটা জায়গা সুন্দর করে সাজাতে ওরা খুব মজাপাবে। আপনি নানারকম জিনিস এবং চিন্তাভাবনা দিয়ে ওদের সাহায্য করুন। কাজ শেষ হয়েগেলে সন্তানের বন্ধুদের বাড়িতে ডাকুন, যাতে ওরা নিজের সাজানো জায়গাটা দেখাতে পারে।পাশের ফ্ল্যাটের শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আঁকা, ক্রিয়েটিভ রাইটিং বা হাতের কাজেরপ্রদর্শনীও করতে পারেন। এতে ওদের সময় চমৎকার কাটবে।  

৫। সব শিশুই বাবা-মায়েরছেলেবেলার গল্প শুনতে ভালোবাসে। এই ছুটিতে শুধু গল্প বলা নয়, সেই জায়গাগুলো ওদেরচাক্ষুষ দেখিয়ে আনতে পারেন। আপনার ছেলেবেলার স্কুল, কলেজ, পার্ক থেকে ওদের ঘুরিয়েআনেন। সঙ্গে বলুন জায়গা সম্পর্কিত আপনার ছেলেবেলার গল্প। কিনে দিতে পারেন আপনারছোটবেলার প্রিয় দোকান থেকে টুকিটাকি জিনিস। এই ছোট ছোট জিনিস আপনার সন্তানের উপরবিস্তার করবে সুপ্রভাব, লম্বা ছুটি সন্তানের জন্য হবে আনন্দময়।