স্বাস্থ্য

শিশুর গলায় ইনফেকশন

ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কিংবা ভাইরাস গলায় বাসা বাঁধলে গলায় ইনফেকশনের সমস্যা দেখা দেয়। গলায় ব্যথা, বিশেষ করে ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি-কাশি ও জ্বর। গরম বেশি পড়লে ভাইরাস আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ রোদ আর ঘামে শিশুরা এমনিতেই ক্লান্ত হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে শিশুর যদি ঠাণ্ডা জল ও আইসক্রিম খাওয়ার  অভ্যেস থাকে তাহলে ইনফেকশনের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়।

রোগ কীভাবে ছড়ায়

এই রোগেরজীবাণু আমাদের চারপাশেই ঘুরে বেড়ায়। নিশ্বাসের মাধ্যমেই বেশিরভাগ সময়েই জীবাণুশিশুদের শরীরে প্রবেশ করে। তাই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে খুব সহজেই এই ইনফেকশন ছড়ায়।শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বিধায় বড়দের তুলনায় শিশুদের ইনফেকশন হওয়ারপ্রবণতা বেশি দেখা যায়।

ইনফেকশন হলে কী হয়

গলায় ইনফেকশনহলে শিশুর খেতে অসুবিধা হয়। গলার স্বর ভেঙ্গে যায়। সঙ্গে থাকতে পারে জ্বর ও গায়েব্যথা। অনেক সময় গ্ল্যান্ড ফুলে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গলায় ইনফেকশন থেকে পেটেওসমস্যা দেখা যেতে পারে।

কী করবেন

শিশুকে এই সময়সার্বক্ষণিক নজরে রাখবেন। নির্দিষ্ট সময় পর পর শিশুর জ্বর মাপুন। গলায় অস্বস্তিরকারণে এই সময় শিশুর বমি করার প্রবণতা থাকে। তাই একবারে বেশি না খাইয়ে বারে বারেঅল্প অল্প খাবার খাওয়াবেন। স্যুপ, গরম দুধ বা এরকম কোনো উষ্ণ খাবার দিলে শিশু আরামপাবে। সারাদিনে কতবার পস্রাব হচ্ছে তা খেয়াল করুন। পস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেবুঝবেন শিশু জল স্বল্পতায় ভুগছে। এই সময় তাই বেশি করে জল পানের উপর জোর দেওয়া হয়।না হলে শিশু ক্লান্ত হয়ে পড়বে। বমি যদি বেশি হয় তাহলে স্যালাইন, লেবুর শরবতখাওয়াতে পারেন। শিশু যদি নেতিয়ে না পড়ে তাহলে ঘরেই চিকিৎসা করান। মনে রাখবেন এইসময় শিশুর বিশ্রাম খুব জরুরি। রোদে না বের হলেই ভালো। হালকা খাবার খাওয়াবেন। তেল-ঝালবেশি দেবেন না। দুদিনে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শনেবেন।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

গলার ইনফেকশনপ্রতিরোধের জন্য বাড়িতে যদি অন্য কারো ইনফেকশন হয়ে থাকে তাহলে তাকে কয়েকদিন আলাদাঘরে রাখুন। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশি থেকে শিশুর গলায় ইনফেকশন ছড়িয়েপড়বে না। শিশু আক্রান্ত হলে যদি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তাকে অ্যান্টিবায়টিকদেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কাশির জন্য কাশির সিরাপ দেওয়া হয়। আর জ্বর কমানোর জন্যদেওয়া হয় প্যারাসিটামল। তবে শিশুর যদি ইনফেকশন বুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিশ্বাস নিতেকষ্ট হয় তাহলে তাকে নেবুলাইজ করতে হতে পারে। মনে রাখবেন বিশ্রাম খুব জরুরি। যত বিশ্রামপাবে, শিশু তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।