পড়াশোনার একটা অংশ হোমওয়র্ক। কিন্তু পড়ার সময় বারবার উঠে যাওয়া, জল খাওয়ার উছিলা, টিভিতে কার্টুন দেখতে চাওয়া, একটা জিনিস করতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা এসব ঝামেলা পেরিয়ে হোমওয়র্ক করানো রীতিমতো এক কষ্টের ব্যাপার। এছাড়া অনেক পরিবারেই বাবা-মা দুজনই চাকরি করেন। অফিসের চাপ সামলে সীমিত সময়ের মধ্যে সন্তানের লেখাপড়ার দিকে নজর দিতে গিয়ে মেজাজ হারান অনেকেই। আসলে আমরা ভুলেও যাই তখন যে ছোটরা আসলে ছোটই। ওদের পক্ষে হোমওয়র্কের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা বোঝা সম্ভব নয়। হোমওয়র্ক ব্যাপারটাকে সন্তানের কাছে কঠিন বা গুরুগম্ভীর বিষয় করে তুলবেন না। খেলাচ্ছলে শিশুকে পড়তে উৎসাহ দিন, দেখবেন ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়য়ে যাবে। হোমওয়র্ক করানোর সময় মনে রাখুন কিছু বিষয়।
১। সন্তানকে একটা নির্দিষ্ট সময় পড়তে বসার অভ্যাস করান। আপনি যদি চাকরি করেন তাহলে বাড়িতে যিনি থাকেন তাকে বলুন সন্তান ঠিকমতো পড়তে বসে কিনা তা নজর রাখতে। আপনার ব্যস্ততার মধ্যেও কিছুটা সময় ওর জন্য রাখুন। আপনাকে অফিস থেকে ফিরেই তাড়াহুড়া করে হোমওয়র্ক শেষ করাতে হবে, এমন মানসিকতা বদলান। এতে সন্তানও দায়সারাভাবে তার কাজগুলো সারবে। ধৈর্য ধরে সন্তানের পাশে বসুন। তাতে ওর উৎসাহ বাড়বে।
২। পড়াশোনার জন্য দরকার উপযুক্ত পরিবেশ। যে ঘরে বাইরের লোকজনের যাতায়াত থাকে কিংবা টিভি দেখা হয় সেই ঘরে শিশুকে পড়তে বসাবেন না। শিশুর পড়ার সময় বাড়ির অন্য সদস্যদের আড্ডা মারা বা টিভি দেখা বন্ধ রাখুন। আপনিও শিশুকে পড়তে বসিয়ে পাশে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন না। এতে আপনার সন্তান অন্যমনস্ক হয়ে যেতে পারে।
৩। হোমওয়র্ক করার সময় টানা না করিয়ে মাঝে সন্তানকে কিছুটা ব্রেক দিন। মাঝখানে ও অন্যকিছু করতে পারে। সেটা ছবি আঁকা, খেলা, সাইকেল চালানো, গল্পের বই পড়া বা ওর পছন্দের যেকোনো কাজই হতে পারে।
৪। সন্তানকে বলুন পড়তে বসার আগে ওর পড়াশোনার প্রয়োজনীয় জিনিস আগে থেকেই গুছিয়ে নিয়ে বসতে। পড়তে বসে এটা সেটা না পেলে পড়াশোনায় মন বসানো মুশকিল হয়ে যায়।
৫। হোমওয়র্ক করার আগে সন্তানকে পড়াটা বুঝিয়ে দিন। সময়সাপেক্ষ হোমওয়র্ক যেমন প্রজেক্টওয়র্ক হলে তা ছুটির দিন সময় নিয়ে করাতে চেষ্টা করুন।
৬। প্রতিটি শিশুরই কোনো একটা বিষয়ের উপর বেশি উৎসাহ থাকে। সন্তানের প্রিয় বিষয় দিয়ে হোমওয়র্ক শুরু করুন। অঙ্ক বা সায়েন্সের মতো বিষয়গুলো যেগুলোতে মাথা বেশি খাটাতে হয় তা শুরুর দিকে করালেই ভালো। ছবি আঁকার মতো কাজগুলো শেষের দিকে করানোর চেষ্টা করুন।