লিড নিউজ

লড়াই শেষ উন্নাও নির্যাতিতার, ফুঁসছে দেশ

লড়াইয়ে ইতি। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের সেই নির্যাতিতা। যাঁকে এক বছর আগে ধর্ষণ এবং তার বিচার চাইতে গিয়ে দু’দিন আগে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। আর এই ঘটনায় ফের উত্তাল হতে চলেছে গোটা দেশ। কারণ কারও শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেলে বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে আসে। তাও বাঁচতে চেয়েছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। আগুনে পোড়া শরীরটা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন এক কিলোমিটার। চিত্‍‌কার করে সাহায্য চেয়েছেন। কেউ তাঁর আর্তিতে সাড়া দেয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাত ১১টা ১০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হন নির্যাতিতা। শেষমেশ ১১টা ৪০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। নির্যাতিতা পুলিশকে বয়ান দিয়ে জানান, রায়বরেলি যাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ স্টেশন পৌঁছন। ওই দিন ধর্ষণ মামলায় তাঁর শুনানি ছিল। সেখানেই তাঁকে ধাওয়া করে পাঁচ দুষ্কৃতী। যার মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদী এবং শুভম ত্রিবেদীও ছিল। তারা প্রথমে লাঠি দিয়ে নির্যাতিতার পায়ে সজোরে আঘাত করে। গলায় ছুরি চালায়। এরপর পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগা অবস্থা নির্যাতিতা ছুটতে ছুটতে প্রাণ ভিক্ষা করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বিমানে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় সফদরজঙ্গ হাসপাতালে। সেই লড়াইটা শেষ হল।
পুলিশের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে তাঁর আর্জি ছিল, ‘‌দেখবেন অপরাধীদের একজনও যেন ছাড়া না পায়।’‌ পুলিশ সূত্রে খবর, হামলাকারী পাঁচ জনের মধ্যে দু’‌জন ছিল তাঁর ধর্ষক। তার মধ্যে একজন পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। অন্য জন সদ্য জামিন পেয়ে জেলের বাইরে বেরোয়। এরপরই নির্যাতিতাকে প্রাণে মারার ছক কষে তারা। মামলার শুনানির দিনটিকেই তারা হামলার জন্য বেছে নিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বৃহস্পতিবারই ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, যে রাজ্যের পুলিশ ৪ মাস পর এফআইআর করে সেখানে মহিলারা কতটা সুরক্ষিত, প্রশ্ন রয়েছে।