অক্টোবর মাসে বেকারত্বের হার যে জায়গায় পৌঁছল, তা গত ৩ বছরে সর্বোচ্চ। বেকারত্ব নিয়ে শুক্রবার এমনই তথ্য প্রকাশ করল সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ২০১১–১২ থেকে ২০১৭–১৮, এই ৬ বছরে ভারতে চাকরির সংখ্যা কমেছে অন্তত ৯০ লক্ষ। স্বাধীন ভারতে এই প্রথম। একই সঙ্গে বাড়ছে দেশে বেকারত্বের হারও। অক্টোবর মাসে ভারতে বেকারত্বের হার বেড়ে পৌঁছেছে সাড়ে ৮ শতাংশে। সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে ১.৩ শতাংশ বেশি।
সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, অক্টোবরে বেকারত্বের হার পৌঁছছে ৮.২ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে যা ছিল ৭.২ শতাংশে। এই রিপোর্ট স্বভাবতই অস্বস্তিতে রাখবে মোদী সরকারকে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের তত্ত্বাবধানে হওয়া অন্য একটি গবেষণা ঠিক উল্টো কথা বলেছে। দুই অধ্যাপক লভীশ ভান্ডারি এবং অমরেশ দুবের যৌথ গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, ২০১১–১২ থেকে ২০১৭–১৮, এই ৬ বছরে ভারতে চাকরির সংখ্যা ৪৩ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে বেড়ে ৪৫ কোটি ৭০ লক্ষে পৌঁছেছে।
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি নেমেছে ৬ শতাংশের নীচে। পরিকাঠামো শিল্পের বৃদ্ধির হার মন্থর। তলানিতে ঠেকেছে অটো সেক্টর। ব্যাঙ্ক, টেলিকম, রেল ক্ষেত্রও তথৈবচ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণের পরের দিনই দেশের কর্মসংস্থানের বেহাল ছবি সামনে আনে পরিসংখ্যান মন্ত্রক। সেই রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৭–১৮ অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। ১৯৭৪ সালের পর দেশের কর্মসংস্থানের হাল কখনও এত খারাপ হয়নি। যদিও পরিসংখ্যান মন্ত্রকের দাবি, সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে কর্মসংস্থানের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আগের হিসেবের সঙ্গে বেকারত্বের এই হারের তুলনা করা ঠিক নয়।
সরকারি রিপোর্ট বলেছে, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উত্পাদন এক ধাক্কায় কমেছে ৫.২ শতাংশ। যা এক দশকে নজির বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। কয়লা, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস–সহ ৭ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উৎপাদন সংকুচিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারত্বের হার বৃদ্ধি তার অনিবার্য পরিণতি। তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার ফলে ভারতে দ্রুত পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছে শিল্প ও পরিকাঠামো ক্ষেত্র দু’টিও।
