মঙ্গলবার ফের ঘেরাও হলেন আচার্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। এদিন সকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করার মুখেই রাজ্যপালের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। সঙ্গে চলতে থাকে গো–ব্যাক স্লোগান, কালো পতাকা। আজ সেখানে সমাবর্তন। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, রাজ্যপালকে ছাড়াই সমাবর্তন অনুষ্ঠান করতে হবে। ডিগ্রি যদি নিতেই হয়, তাহলে উপাচার্যের কাছ থেকে নেওয়া হবে। কিন্তু আচার্য হিসাবে তাঁরা রাজ্যপালকে মেনে নিতে নারাজ। তখন গাড়ি থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থার ডিএনএ পচে গিয়েছে।’
নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন এবং এনআরসি’র বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। গোটা ঘটনা ঘিরে ফের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর উত্তাল হয়ে ওঠে। ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যপাল বলেন, ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক মুহূর্ত। আমি মর্মাহত। পরিকল্পিতভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।’
উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ তুলে নিতে নির্দেশ দিন। তারপরই উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, দুই সহ–উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে প্রশাসনিক ভবনে বিশেষ বৈঠকে বসেন তাঁরা। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কোর্টের সদস্যরা এবং উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, দুই সহ–উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার পাঁচ নম্বর গেটে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বোঝাবেন বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
এদিকে রাজ্যপাল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আচার্যকে ছাড়া কোনওভাবেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেবেন না তিনি। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছেন, অবিলম্বে এই বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য। অন্যদিকে এদিন সিএএ এবং এনআরসি’র বিরোধিতা করে এদিন সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বাইরেও একদল পড়ুয়া বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অনেকে আবার কালো ব্যাজ পরে বিরোধিতায় সরব হন। দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করার পর পরিস্থিতি না বদলানোয় ক্যাম্পাস ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল। আর উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেন পড়ুয়ারা। তারপর পতাকা উত্তোলন করে সমাবর্তন শুরু করেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।