টেনশন, অতিরিক্ত পরিশ্রমকিংবা বড় ধরনের অসুখ – যে কোনো কারণেই হতে পারে মাথাব্যথা। কপালের দুপাশে, চোখেরএবং কানের উপরে, মাথার পেছন দিকে এমনকি মাঝে মাঝে ঘাড়েও ছড়িয়ে পড়ে এই মাথাব্যথা। মাথাব্যথাকে ভাগ করা যায়দু ভাগে-
প্রাইমারী হেডেক- কোনো বড়অসুখের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এই মাথাব্যথার। টেনশন কিংবা মাইগ্রেন থেকে মাথাব্যথা হলেতা প্রাইমারী হেডেক হিসেবে দেখা হয়। প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এ ধরনেরমাথাব্যথায় ভোগেন।
সেকেন্ডারি হেডেক-সেকেন্ডারি হেডেক হলো কোনো অসুখজনিত কারণে মাথাব্যথা। হতে পারে তা সাধারণ জ্বরেরমতো অসুখ কিংবা ব্রেন টিউমার, স্ট্রোক বা মেনিনজাইটিসের মতো বড় কোনো অসুখের কারনেওকেউ সেকেন্ডারি হেডেকে ভুগতে পারেন।
মাথাব্যথার সাধারণ কারণ ওপ্রতিকার
১। আমরা অন্য রোগের জন্য যেসব ওষুধ খাই, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও মাথা ব্যথা করতে পারে। গর্ভনিরোধক পিল, অ্যান্টিঅ্যালারজিক ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজের ইচ্ছেমতো খাবেন না।
২। অনেক সময় বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকলে অ্যাসিডিটি হয়ে মাথা ব্যথা করে। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে ঠিক সময়ে খাবার খাবেন।
৩। একটু মাথা ধরলে অনেকেই পেইন কিলার খেয়ে ফেলেন। আমাদের শরীরও ক্রমে ক্রমে এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই পেইন কিলার না খেলে মাথা ব্যথা কমতেও চায় না। এটা ঠিক নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই পেইন কিলার খাবেন না।
৪। মাইগ্রেন হলো মাথাব্যথার প্রধান কারণ। সপ্তাহে দু-তিনবার কপাল ও চোখের চারপাশে একটানা ব্যথা করা আর বমি বমি ভাব লাগা হচ্ছে মাইগ্রেনের প্রাথমিক লক্ষণ। বারবার এই লক্ষণ দেখা দিলে, চিকিৎসকের কাছে যান।
৫। আধুনিক নগর জীবনে হাইপারটেনশন আমাদের নিত্যসঙ্গী। হাইপারটেনশন থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে। যোগাসন করলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৬। নারীদের মাসিক শুরুর আগে কিংবা মাসিকের সময় মাথাব্যথা হতে পারে। এ সময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে পারেন।
৭। মাথাব্যথা হতে পারেডায়াবেটিস থেকেও। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
কখন বুঝবেন মাথাব্যথা বড়কোনো রোগের লক্ষণ-
১। মাথাব্যথার সঙ্গে জ্বর, বমি, ঘাড়ে আর গলায় ব্যথা, আলসেমি, মস্তিস্কে ইনফেকশন বা মেনিনজাইটিসের কারণে হতে পারে।
২। মাথাব্যথার সঙ্গে কেউযদি অজ্ঞান হয়ে যায় তবে তা মস্তিস্কের রক্তক্ষরণের কারণে হতে পারে।
৩। মাথাব্যথা যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে তবে তা ব্রেন টিউমার বা মস্তিস্কের কোনো অসুখের সংকেত হতে পারে।
মাথাব্যথার এরকম কোনো লক্ষণ দেখা গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।