আজ ১২ ভাদ্র বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম প্রয়াণ দিবস। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় যে কবির আবির্ভাব ঘটেছিল ‘জ্যৈষ্ঠের ঝড়’ হয়ে, সে ঝড় চিরতরে থেমে গিয়েছিল ঢাকার পিজি হাসপাতালের (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) কেবিনে, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্রে। অঙ্কের হিসাবে তাঁর জীবনকাল ৭৭ বছরের; তবে সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। নজরুলের এই ২৩ বছরের সাহিত্যজীবনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। যে কারণে ভারত ও বাংলাদেশ আজ যথাযোগ্য মর্যাদায়, গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে বিদ্রোহী কবিকে। বাংলাদেশে কাজী নজরুল ইসলাম অভিষিক্ত হয়েছেন জাতীয় কবির মর্যাদায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীপ্তিতে ভাস্বর বাংলা সাহিত্যের ভুবনে স্বতন্ত্র ভাষা রীতি ও শব্দের প্রয়োগে এক নতুন কাব্যধারার সংযোগ করেছিলেন নজরুল। যা তাঁকে যেমন বিপুলভাবে জনপ্রিয় করে তুলেছিল, তেমনি বাংলা কবিতাকেও সমৃদ্ধ করেছিল। উত্তর ভারতীয় রাগসংগীতের দৃঢ় ভিত্তির ওপর রচনা করেছিলেন আধুনিক বাংলা গানের সৌধ। প্রবর্তন করেছিলেন বাংলা গজল। সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলার সাহিত্যাকাশে নজরুলের অভ্যুদয় শুধু ধূমকেতুর সঙ্গেই তুলনীয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সম্পর্কে যথার্থই বলেছেন, ‘…আয় চলে আয় রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু,/দুর্দিনের এই দুর্গশিরে/ উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।’