দেশ

প্রয়াত হলেন নেতাজির বৌমা কৃষ্ণা বসু

প্রয়াত হলেন রাজনীতিক–শিক্ষাবিদ কৃষ্ণা বসু। শনিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। নেতাজির ভাইপো শিশিরকুমার বসুর স্ত্রী। তাঁর পুত্র বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুগত বসুও তৃণমূল সাংসদ ছিলেন। নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর প্রধান কৃষ্ণা বসু দীর্ঘ ৪০ বছর অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সিটি কলেজের এই অধ্যাপিকার অসংখ্য বই রয়েছে। তার মধ্যে নেতাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণামূলক বই বেশ জনপ্রিয়। হার্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
পরিবার সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। চার বছর আগে একবার হার্ট অ্যাটাকও হয় তাঁর। গত চার–পাঁচদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এদিন কলকাতায় মায়ের পাশে ছিলেন দুই ছেলে সুগত বসু ও সুমন্ত্র বসু। শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর জানান তাঁর দুই ছেলে।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে অবিভক্ত ভারতের ঢাকা শহরে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা চারুচন্দ্র চৌধুরী বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সচিব পদে ছিলেন। ১৯৫৫ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর বড়ভাই শরৎচন্দ্র বসুর পুত্র শিশির কুমার বসুর সঙ্গে বিয়ে হয় কৃষ্ণাদেবীর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর হন। তারপর সিটি কলেজে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অধ্যাপনা করেছেন। ওই কলেজের অধ্যক্ষও ছিলেন টানা ৮ বছর। তাঁর পরিচিতির ব্যাপ্তি ঘটে নেতাজি নিয়ে গবেষণায়। কাউন্সিল অব নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর প্রধান ছিলেন। নেতাজি সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর একাধিক লেখালিখি রয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে যাদবপুর কেন্দ্রে তিনবারের সাংসদ ছিলেন তিনি। একাধারে শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ ছিলেন কবি কৃষ্ণা বসু। ১৯৯৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে প্রথম সাংসদ হন তিনি। এরপর কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতার সহযোদ্ধা হিসাবে কাজ করেছেন। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন। পরপর তিনবার সাংসদ থাকাকালীন কেন্দ্রের বিভিন্ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন। বিদেশ মন্ত্রক বিষক কমিটির চেয়ারপার্সনও ছিলেন তিনি।
শনিবার তাঁর বসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে মরদেহ। এরপর নেতাজি ভবনে দীর্ঘক্ষণ রাখা হবে তাঁর দেহ। বিকেলে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে খবর। কৃষ্ণা বসুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে বিভন্ন মহলে। তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভাল বক্তব্য রাখতেন কৃষ্ণাদি। তাঁকে দেখে মায়ের মতো মনে হতো। বরাবর উৎসাহ দিতেন।