মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরত জাহান (রাফি) হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত। মাদ্রাসার শিক্ষক সিরাজদৌল্লা–সহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি। বৃহস্পতিবার ১১টা নাগাদ এই রায় দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মহম্মদ মানুনুর রশিদ নুসরত হত্যা মামলায় ১৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিতে সময় লাগে ১২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড। রায় শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন দোষীরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের নুসরত হত্যাকাণ্ড সাড়া ফেলেছিল গোটা বিশ্বেই। মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলায় গত ৬ এপ্রিল ফেনির সোনাগাজির মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরত জাহানের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই হত্যাকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। তদন্তে নেমে মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
২৮ মে তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ–সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ৮৬৯ পাতার চার্জশিট দাখিল করে বাংলাদেশের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। ১৬ জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে ফেনির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। তারা হল– সোনাগাজি ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লা, সোনাগাজি উপজেলা আওয়ামি লিগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজি পুরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, আফসারউদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নুরউদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামিম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামিম এবং মহিউদ্দিন শাকিল।
দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষেই সওয়াল করেছিল সরকার। পরিবারও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিল। কারণ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে নিতে পরীক্ষা চলাকালীন নুসরতকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে যায় সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি। সেখানে তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয় চার ব্যক্তি। রাজি হয়নি নুসরত। তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।