ফাঁসির নির্ধারিত দিনের প্রায় দু’সপ্তাহ আগে নির্ভয়ার ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত চারজন—বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত এবং মুকেশ সিংকে চিঠি পাঠাল তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে পরিবারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করার বিষয়ে জানানো হয়েছে। দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টের জারি করা পরোয়ানা অনুযায়ী আগামী ৩ মার্চ ভোর ৬টায় তিহাড় জেলে ফাঁসি হওয়ার কথা চার দোষীর। তাই শেষবারের মতো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানিয়ে তাদের চিঠি দিল তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ।
সংবাদসংস্থা এএনআই–কে এক জেল আধিকারিক জানান, মুকেশ ও পবন জানিয়েছে আগেই পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে তারা। অক্ষয় ও বিনয়কে সাক্ষাৎ সম্পর্কে জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগেও একাধিকবার নির্ভয়াকাণ্ডের চার দণ্ডিত বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত এবং মুকেশ সিংয়ের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে সেগুলি কোনও না কোনও আইনি জটিলতায় আটকে গিয়ে বাতিল হয়েছে। ফের নতুন মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এদিকে মক্কেল বিনয় শর্মা মানসিকভাবে অসুস্থ জানিয়ে আদালতে আবেদন করেছেন তার আইনজীবী। জেলের দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকে বিনয় গুরুতর আঘাত পেয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। এমনকী সে নিজের আইনজীবী ও মা–কেও চিনতে পারছে না বলে দাবি করেছেন আইনজীবী এ পি সিং। যদিও মামলা চলাকালীন সরকারি আইনজীবী ইরফান আহমেদ আদালতকে জানান, বিনয়ের মানসিক অসুস্থতার কোনও মেডিক্যাল ইতিহাস নেই।
নিয়ম মেনেই ফাঁসির আগে দোষীদের চিঠি লেখা হয়েছে। সাধারণ সভা চলাকালীন সময়ে বন্দিরা জানালার মাধ্যমে তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে, মুখোমুখি সাক্ষাৎ করার অনুমতি পায়। আইনানুযায়ী ফাঁসির আগে সাজাপ্রাপ্তদের শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হয়, তারা ফাঁসির আগে শেষবারের মতো কোনও ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে চায় কি না? কিন্তু তিহাড় কারা কর্তৃপক্ষের এই ধরনের কোনও পদক্ষেপেই অংশ নেয়নি চার ধর্ষক।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার মধ্যে তিহাড় জেলের ভেতরেই আত্মহত্যা করে অভিযুক্ত রাম সিংকে। ঘটনায় অভিযুক্ত এক নাবালক তিন বছর সরকারি হোমে কাটানোর পর বর্তমানে মুক্ত। বাকি ৪ দোষীর আগামী ৩ মার্চ ফাঁসি হওয়ার কথা।