লাইফস্টাইল

নারী দিবসের রং বেগুনি কেন?

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ বছর নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য সমতা’ বা ‘ইচ ফর ইক্যুয়াল’।  বিশ্বব্যাপী উপজীব্য হিসেবে নারীরা উদযাপন করে থাকেন এ দিবস। দীর্ঘ কালপরিক্রমায় নারী দিবসের তাৎপর্যের প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বেগুনি রং। আন্তর্জাতিক দিবসগুলোর তাৎপর্যের ওপর এগুলোর পোস্টার বা প্রতীকের রং বেছে নেওয়া হয়। যেমন বিশ্ব শান্তি দিবস সবুজাভ নীল, বিশ্ব শ্রম দিবস বা মে দিবসে লাল, পরিবেশ দিবসে সবুজ রং ইত্যাদি। প্রতিটি দিবসে আলাদা রঙের প্রতীক হওয়ার পেছনে রয়েছে অনন্য ইতিহাস। আন্তর্জাতিক নারী দিবস মূলত বেগুনির সঙ্গে সাদার মিশেল কিংবা শুধুই বেগুনি।আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সারা বিশ্বের মতো ভারতের নারীরাও সাজেন বেগুনি রং প্রাধান্য দিয়ে। মানুষের জীবনে রঙের বৈচিত্র্য সবসময়। নারী দিবসের এ রং ভেনাসের, যা কিনা নারীরও প্রতীক। কেননা, বেগুনি নির্দেশ করে সুবিচার ও মর্যাদা; যা দৃঢভাবে নারীর সমতায়নের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম শেষে বেগুনি রং এখন নারীবাদীদের প্রতিবাদের এক অনন্য প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কেন বেগুনিই হলো নারীর প্রতীকী রং? কিংবা নারী দিবসের রং? কেন এ রংকেই প্রাধান্য দিয়ে পরা হয় পোশাক! এর পেছনেও আছে দীর্ঘ ইতিহাস। ১৮৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারী শ্রমিকদের হাত ধরেই হয়েছিল এর যাত্রা। নারীর ক্ষমতায়ন এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কিছু সাহসী নারীর পদক্ষেপ ছিল এ ক্ষেত্রে মুখ্য। প্রায় পনেরো হাজার নারী সেদিন নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় নেমে গিয়েছিল। করেছিল নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলন-লড়াই। যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তাই ১৯৯৬ সাল থেকে জাতিসংঘ প্রতি বছর নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে আসছে। নারীর সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাফল্যগাথা এবং লিঙ্গ সমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে করা হয় এসব প্রতিপাদ্য। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী বৈচিত্র্যের সঙ্গে নানাভাবে দিনটি উদযাপন করে থাকে এবং তাদের সাংস্কৃতিক মতবিনিময় হয় একে অপরের সঙ্গে। তাদের এ দিনে কোনো সুনির্দিষ্ট রঙের পোশাক পছন্দ না থাকলেও আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট আইডব্লিউডি ডটকমের ব্যাখ্যা থেকে জানা যায়, ‘কেন বেগুনিকেই দিবসের প্রতীক রং ধরা হলো। আন্তর্জাতিকভাবে নারীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয় বেগুনি রংকে। এ রঙের ঐতিহাসিক কারণও রয়েছে। বেগুনি রঙের সংমিশ্রণ যার সবুজ এবং সাদা দেখা হয় নারীর সমমর্যাদার প্রতীক হিসেবে। এর সূত্রপাত ঘটেছিল ১৯০৮ সালে ইউকেতে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক ইউনিয়ন থেকে। বেগুনিকে দেখা হতো নারীর ন্যায়বিচার ও সম্মানের প্রতীক। সবুজ হলো আশা এবং সাদা বিশুদ্ধতার প্রতিনিধিত্ব করে।

১৯৭৫ সালে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র পালন করে নারী দিবস। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সদস্য দেশকে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে দিবসটি উদযাপনের আহ্বান জানানোর পর থেকে ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিবসটি। বিশ্বের অনেক দেশে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। এর মধ্যে চীন, মেসিডোনিয়া, মাদাগাস্কার, নেপালে শুধু নারীরাই সরকারি ছুটির দিন উপভোগ করেন।