নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ করেছে কংগ্রেস। আমরা নই। বিদেশে অত্যাচারিত হচ্ছেন হিন্দু–সহ অন্যান্য ধর্মের মানুষ। ভারত সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তা পেলেও পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়নি। তাই এই বিল আনতে হয়েছে।’ শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম পর্বে ওই বিল পেশের সঙ্গে সঙ্গেই উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ।
এদিকে বিলের একাধিক অংশ নিয়ে আপত্তি তোলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন,‘আমাদের দেশের সংখ্যালঘু মানুষদের লক্ষ করেই এই বিলটি বানানো হয়েছে।’ বিলটি অসাংবিধানিক এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী বলে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ও। পাল্টা অমিত শাহ সংসদে বলেন, ৫ এবং ১৪ নম্বর ধারা কোনওভাবেই ভঙ্গ হচ্ছে না। নতুন আইন তৈরিতে কোনও বাধা নেই ওই দুই ধারায়। আগেও বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দুদের এদেশে আশ্রয় দিয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী। উগান্ডার মানুষদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় যেখানে সবার জন্য আইনের সমতার কথা বলা হয়েছে তা লঙ্ঘন হবে না।
এই বিলটি লোকসভায় গৃহীত হবে কিনা তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়। সেখানে ২৯৩–৮২ ভোটে বিলটি পাশ হয়ে যায়। গত জানুয়ারিতে লোকসভায় পেশ হয়েছিল সংশোধিত বিলটি। তাতে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ, খৃস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ, যাঁরা এই দেশে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিলটিতে ভিত্তিবর্ষ হিসাবে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ সালকে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ ওই দিনের আগে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরাই নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়টি বিলে অনুচ্চারিত থাকে।
বিলটি পাশ হওয়ার পর অসমে দু’দিনের বন্ধের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। রাস্তায় নেমে চলছে স্লোগান, মিছিল। বিক্ষোভে সরব ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্রদের সংগঠন নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (এনইএসও) নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে গোটা উত্তর–পূর্বে বন্ধের ডাক দিয়েছে। সোমবার অসমে বন্ধের ডাক দিয়েছে অল কোচ রাজবংশী স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, অল অসম চুটিয়া স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং অল মোরান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।