আন্তর্জাতিক

জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুগাবের জীবনপঞ্জি

জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ রবার্ট মুগাবে মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জিম্বাবুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমারসন দাম্বুডজো তার টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘খুব দুঃখের সঙ্গে আমাকে এই ঘোষণা দিতে হচ্ছে যে, জিম্বাবুয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতির পিতা এবং প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে আর নেই। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার প্রতীক এবং মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য সারাজীবন কাজ করে গেছেন।’ ৯৫ বছরের জীবনে বহু ঘটনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন রবার্ট মুগাবে।২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুগাবেকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

১৯২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেনের অধীনে থাকা তৎকালীন দক্ষিণ রোডেশিয়ায জন্মগ্রহণ করেন মুগাবে। ৪০ থেকে ৫০ এর দশকে ক্যাথোলিক স্কুল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব ফোর্ট হেয়ারে পড়ালেখা করেন তিনি। ৬০ এর দশকে জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতার পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন মুগাবে। রোডেশিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে আন্দোলনরত ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে কারাগারে যেতে হয় তাকে। ওই সময় আইন বিষয়ে দুটি উচ্চতর ডিগ্রি নেন তিনি। ১৯৭৪ সালে কারাগার থেকে বের হয়ে মোজাম্বিকে পালিয়ে যান মুগাবে। সেখানে গেরিলা সংগঠনের নেতা হন তিনি। ১৯৮০ সালে কৃষ্ণাঙ্গ প্রার্থীরা জিম্বাবুয়ের নির্বাচনে দাপুটে জয় পায়। জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়নের (জানু) এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ১৮ এপ্রিল। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ১৯৮৭ সালে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট হন মুগাবে। ১৯৯০ সালে রাজনৈতিক দল জানু ও মুগাবে সংসদীয় এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন। ৯৮ সালে অর্থনৈতিক দুরবস্থার মুখোমুখি হতে হয় মুগাবে সরকারকে। এ নিয়ে দাঙ্গাও হয়।২০০০ সালে গণভোটে মুগাবের নতুন সংবিধান প্রত্যাখ্যান করে জিম্বাবুয়ের জনগণ। ভোটে পরাজিত হন তিনি। ২০০২ সালে বিতর্কিত এক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন মুগাবে।

জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ রবার্ট মুগাবে

২০১০ সালে সংবাদ মাধ্যমে মুগাবের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। ২০১৩ সালে বিতর্কিত আরেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান রবার্ট মুগাবে। ২০১৬ সালে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মুগাবে। ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০১৮ সালে প্রথম জনসম্মুখে দেখা যায় মুগাবেকে। এ সময় সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত এপ্রিলে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মুগাবে শুক্রবার সকালে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।